ঢাকা: জনগণ সরকারের ফরমায়েশি নির্বাচনী তফসিল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসেছে; তারা এই ষড়যন্ত্রমূলক ও গণ-বিরোধী তফসিল বাতিল এবং কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না বলেছে জামায়াত। খেলাফত মজলিস তাদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি উপেক্ষা করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বুধবার নির্বাচন কমিশন কর্তৃক একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ ও অবিলম্বে ফরমায়েশি তফসিল বাতিল করে ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে জামায়াত তাদের এ কথা জানায়। কথাটি বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে খেলাফত তাদের দাবি জানায়। এবং আরও বলেছে, দেশবাসী মনে করে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এ সরকারে অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন ও ২০১৮ সালের নৈশভোটের নির্বাচন তারই প্রমাণ। দেশবাসীর দাবি ছিল দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু সরকার গণদাবিকে উপেক্ষা করে বিগত দুটি নির্বাচনের মতো আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। আর সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে লিপ্ত। বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগেই ব্যর্থ হয়েছে। অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত লক্ষ্মীপুর-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এর উপনির্বাচনের কারচুপি ঠেকাতে পারেনি ইসি। এ দায় নিয়েই নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ করা উচিত ছিল। যারা ছোট দুটি উপনির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে পারে না তাদের দ্বারা কীভাবে ৩০০ আসনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব? আজকে ঘোষিত একতরফা নির্বাচনের তফশিলের কারণে দেশের রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হবে। বিরাজমান সংঘাত ও সহিংসতা বৃদ্ধিসহ উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই বহন করতে হবে।
বৈঠকে দেশ ও জাতির স্বার্থে আগামী ৭ জানুয়ারি ঘোষিত একতরফা নির্বাচনের তফশিল বাতিল করে দল নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা করে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জোর দাবী জানানো হয়।
জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিলটি উত্তরা আজমপুর থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে নেতাকর্মীরা সমাবেশ করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মুহিবুল্লাহ ও জামাল উদ্দীন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মাজহারুল ইসলাম এবং ছাত্রনেতা সালাহউদ্দীন প্রমুখ।
খেলাফত মজলিসের বৈঠকে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমীরে মজলিস মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্ব ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন
নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, যুগ্মমহাসচিব অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, মুফতি আবদুল হক আমিনী, মো. জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হক প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
টিএ/এমকে/এমজে