ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

বরিশালের ২১ আসনে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী বেড়েছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৩
বরিশালের ২১ আসনে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী বেড়েছে

বরিশাল: তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখন চলছে নির্বাচনী আমেজে। যারা মনোনয়ন নিয়েছেন, তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঈদের খুশি বিরাজ করছে।

এর ব্যাপকতা এতই- ঢাকা পড়ে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি।

বরিশালে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশীদের হাঁক-ডাক নগরের কোণায় কোণায় শোন যাচ্ছে। নির্বাচনী আমেজ এতটাই প্রকট, জানা গেছে এবার এ বিভাগের ২১ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ২৫৮ জন। অর্থাৎ প্রতি আসনে গড়ে ১২ জন করে মনোনয়ন নিয়েছেন। শুধু আসনের প্রতি হিসাব করলে, কিছু কিছু নির্বাচনী এলাকায় ১৫ বা তার অধিক প্রত্যাশী দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।

এবারই প্রথম বরিশালে নির্বাচন করতে চাওয়া প্রার্থীর সংখ্যা এত বেশি। বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্ধ, খোঁড়া যাকেই মনোনয়ন দেবে তাকেই নির্বাচিত করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর নির্বাচনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যে মনোনয়ন পাওয়ার আশা বেড়েছে। যে কারণেই বহু নেতা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের টিকিট পেতে চাইছেন দলের কাছ থেকে।

বরিশালের আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দলের তৃণমূল পর্যায়ে সক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে, যে শুধু কর্মী বা সমর্থক নয় প্রতিনিয়ত নেতাও তৈরি হচ্ছে। ফলে জাতীয় সংসদের মতো নির্বাচনের ভোটে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছুকদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২১টি আসনে বিপুল সংখ্যক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ হলেও এ নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই বরিশাল আওয়ামী লীগে। স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের দাবি, বিভাগে দলীয় শৃঙ্খলা থাকায় এ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, আগামীর জন্য যা আশার আলো দেখাচ্ছে। দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই নেতাকর্মী ও সমর্থকরা কাজ করবে।

তবে দীর্ঘসময় ধরে একাধিক জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা সাংবাদিক ও লেখক আনিসুর রহমান স্বপন মনে করেন, একটি আসন থেকে ১২ থেকে ১৫ জন দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার বিষয়টি সাংগঠনিক দুর্বলতার অংশ। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে নেতাদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে, যাকে আভ্যন্তরীণ বিরোধও বলা যায়। এর সাথে একাদশ সংসদের সদস্যরাও জড়িয়ে পড়েছেন। তা না হলে দ্বাদশ সংসদের এই নির্বাচনে এক দলেই এতো মনোনয়ন সংগ্রহের মতো বিষয় সৃষ্টি হতো না। এখানে বিভিন্ন ধরণের অবক্ষয় সৃষ্টি হতে পারে, গণতন্ত্রের চর্চা ব্যাহত হওয়ার মতো বিষয়ও থাকতে পারে।

তার মতে, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নিজেরা নিজেদের প্রতিপক্ষ হচ্ছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রমাণ করার জন্য এটা করা হতে পারে।

যদিও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও নির্বাচন বিশ্লেষক মো. সোহেল রানা বলেন, আওয়ামী লীগ একাধারে দীর্ঘদিন ক্ষমতায়, যে কারণে তাদের কর্মী-সমর্থক বেড়েছে। ফলে প্রার্থী হতে চাওয়ার প্রত্যাশাটা বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

তিনি বলেন, যেকোনো দল এত সময় ক্ষমতায় থাকলে তাদের ক্ষেত্রে একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। আর দলের অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চার পরিবেশ সঠিকভাবে থাকলে এটা কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক চর্চার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৩
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।