ঢাকা: আমরা ১৪ দলীয় জোটগতভাবে নির্বাচন করব। এছাড়া অন্যান্যদের সঙ্গে যদি সমন্বয় করতে হয় সেটিও করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সিনেমা হল মালিকদের নবনির্বাচিত কমিটি ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের ৭১/৭২ জন বাদ পড়েছে, প্রতি নির্বাচনেই কিছু প্রার্থী বাদ পড়ে। এবার আগে থেকেই বলা হয়েছিল যারা জনপ্রিয়তার দৌঁড়ে পিছিয়ে গেছেন, যেকোনো কারণে বিতর্কিত হয়েছেন তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। সেই কারণে এবার অনেক বেশি প্রার্থী বাদ পড়েছেন, বাদ পড়াটা স্বাভাবিক। সেখানে কে মন্ত্রী বা বড় নেতা সেটি বিষয় নয়, জনপ্রিয়তা যার নেই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। শেখ হাসিনা মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। এর বাইরে দুই বছরের বেশি সময় ধরে দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নানাভাবে তদন্ত করাচ্ছিলেন, সেই রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করে জনপ্রিয়তা ও দলের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বিবেচনা করা হয়েছে, ইউনেবল প্রার্থী নির্বাচিত করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বহু রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বহু বিএনপি নেতা তৃণমূল বিএনপির নেতৃত্বে বা অন্যান্যভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এবার বহু রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এতে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ হবে বলে আমরা আশা করছি। কোনো দল অংশগ্রহণ করল সেটির চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ আছে কি না।
২০১৪ সালে যারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিল তাদের জরিমানা দিতে হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এবার সেই কথাটি মনে করিয়ে দিতে গিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, সেটি আমাদের দলের জন্য বলেননি, কেউ যদি প্রার্থী হতে চায় নানাভাবে, কোনো ছোটখাট দল থেকে এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থী যদি হতে চায় সেটিকে নিরুৎসাহিত না করার কথা বলেছেন। তার মানে এই নয় যে আমাদের দলকে বলেছেন।
এর আগের নির্বাচনগুলো জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছেন কিন্তু গতকাল যে প্রার্থিতা দিয়েছেন সেখানে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি, তাহলে কি এবার জোটবদ্ধ নির্বাচন করছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমতো আমরা প্রতিবারই জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করি। ২০০৮ সালেও জোটবদ্ধ নির্বাচন করেছি। তখনও ৩শ আসনে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল পরে মহাজোটের মধ্যে সমন্বয় করা হয়েছে। গতবারও প্রায় সব আসনে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। এবারও ২৯৮টি আসনেও নমিনেশন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রথমেই বলেছি জোটবদ্ধ নির্বাচন করবো। সেটা আমাদের দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। নমিনেশন দিলেও জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। কোনো জায়গায় কীভাবে হবে সেটা ঠিক করা হয়নি। সেজন্য সব আসনে নমিনেশন দিয়েছে। পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। আমরা ১৪ দলীয় জোটগতভাবে নির্বাচন করব। এছাড়া অন্যান্যদের সঙ্গে যদি সমন্বয় করতে হয় সেটিও করা হবে। এছাড়া অন্যান্যদের সঙ্গে যদি সমন্বয় করতে হয় সেটিও করা হবে। অতীতেও করা হচ্ছে।
মন্ত্রিসভা ছোট হচ্ছে কি না এবং যে তিনজন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন সেটা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি অনেক আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে। মন্ত্রিসভা ছোট করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যারা এমপি নয় তারা ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। আর মন্ত্রিসভা ছোট করার কোনো বাধ্যবাধকতা সংবিধানে নেই। ২০১৮ সালে সেটি করা হয়নি। আমার মনে হয় আগেই সেটার উত্তর দেওয়া হয়েছে।
১৪ দলের একজন শীর্ষ নেতা যেখান থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন সেখান থেকে আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতাও মনোনয়ন নিয়েছেন এতে করে কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই নয়, আমরাতো প্রায় সব আসনেই নমিনেশন দিয়েছি। জোটের নেতারা কোথায় নির্বাচন করবে। তাদের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা সমন্বয় হবে তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারবিরোধী কিছু রাজনৈতিক দল হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে, এর মধ্যে রাজধানীতে যানজট ও দূরপাল্লার বাস চলছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি দেশের মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং দেশের মানুষের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের এ অবরোধের ডাকে তাদের সমর্থকদেরই সমর্থন নেই, কর্মীদেরও নেই। তাদের এই অবরোধের ডাক যেভাবে রাজনীতিতে যানজট, যেভাবে সারা দেশের শহরগুলোতে যানজট এবং যেভাবে সব কর্মকাণ্ড চলছে তাদের এই অবরোধের ডাক হওয়ায় মিলিয়ে গেছে। নির্বাচনী ডামাডোল যখন আরও শুরু হবে এগুলো কেউ মনেও রাখবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৩
জিসিজি/এএটি