ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে গুম-খুনের দেশ বানিয়েছে: সাকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
সরকার বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে গুম-খুনের দেশ বানিয়েছে: সাকি মানবাধিকার কমিশনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে জোনায়েদ সাকি। ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে গুম-খুনের দেশ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এক মানববন্ধন ও সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাকি বলেন, বাংলাদেশকে আজ দুনিয়ার দরবারে গুম-খুনের দেশ হিসেবে পরিচয় করিয়েছে এ সরকার। এর সঙ্গে দেশের জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। জনগণ এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে বাংলাদেশকে আবার একটি মানবাধিকারের দেশ, মানুষের অধিকারের দেশ, মর্যাদার দেশ, সুযোগের সমতার দেশ তৈরি করতে চায়। সেই লড়াই আমরা করছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দেশ, গুম-খুনের দেশ। একটি দেশের ৬০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে, বিনা বিচারে হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় ৪০ লাখ নেতাকর্মীর নামে এক থেকে দেড় লাখ মামলা দিয়েছে। দেশে ভোটের অধিকার নেই। এসবের ফলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে এবং এমন আরও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, বাংলাদেশে যে একটি মানবাধিকার কমিশন আছে, এটি কয়জন জানেন? তারা (জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কর্মকর্তারা) চাকরি করেন, আমার-আপনার ট্যাক্সের পয়সায় বেতন নেন, গাড়িতে চড়েন। বড় অফিস, এয়ার কন্ডিশন- সব কিছুই তাদের আছে। কিন্তু কাজটি যেটি ছিল, তা হলো- দেশের মানুষের মানবাধিকার আছে কি না, তার দেখভাল করা, সে বিষয়ে মানুষের পক্ষে অবস্থান নেওয়া, সে বিষয়ে তাদের কোনো কার্যক্রম নেই। বাংলাদেশে দালালদের এখন আর কোনো সীমা নেই। এমনভাবে একটি চাকরি জন্য তারা পা চাঁটে যে, তাদের ন্যূনতম দায়িত্বও তারা ভুলে যায়।

দেশে মানবাধিকার বাস্তবায়ন হচ্ছে না, অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে একটি সরকার। আজ ক্ষমতায় থেকে জনগণের ট্যাক্সের পয়সার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করছে মানুষকে অত্যাচার করার জন্য, কারান্তরীণ করার জন্য এবং অপমান করার জন্য, ন্যূনতম নাগরিক অধিকার ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য। মানুষ বিপদে পড়লে সেখানে পুলিশ পাওয়া যায় না। কিন্তু মানুষ যদি অধিকারের জন্য দাঁড়ায় তখন শত শত পুলিশ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়।

গণতন্ত্র মঞ্চের এ নেতা বলেন, আমরা যখন এদের (সরকার) পরাজিত করে দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কার করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারব, তখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি সত্যিকার কার্যকর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হবে। দেশের কোথাও যদি কেউ মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, তখন এটি তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবে।

সমাবেশে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, মানবাধিকার কমিশন অন্ধ, কানা, লুলা। এদের কোনো ক্ষমতা নেই। এরা কথা বলতে জানে না, প্রতিবাদ করতে জানে না। আপনাদের যদি জনগণের মানবাধিকার, অধিকার রক্ষা করার কোনো ক্ষমতা না থাকে কোনো কিছু বলার ধৃষ্টতা না থাকে, তাহলে পদত্যাগ করে অফিস ছাড়ুন।

গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাড. হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩ 
এসসি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।