ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

যারা রেললাইন কেটেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: তথ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩
যারা রেললাইন কেটেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: তথ্যমন্ত্রী কথা বলছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

ঢাকা: যারা রেললাইন কেটেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।



আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি নির্বাচনকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে ক্রমাগতভাবে গুপ্তস্থান থেকে অবরোধের ডাক দেয়। তাদেরতো প্রকাশ্যে আসতে কেউ নিষেধ করেনি। যারা অপরাধ করে তারা গাঁ-ঢাকা দেয়। বিএনপি অপরাধ করেছেনতো এজন্য নিজেরাই গাঁ-ঢাকা দিয়েছেন। এছাড়া আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আজকের পরিস্থিতিতেও জাতীয় পার্টি (জাপা) আগের মতো সহযোগী হিসেবে কাজ করবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের নিবন্ধিত ৪৪ রাজনৈতিকদলের মধ্যে ৩০টি রাজনৈতিকদল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বেশিরভাগ রাজনৈতিকদল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে ক্রমাগতভাবে গুপ্তস্থান থেকে অবরোধের ডাক দেওয়া হচ্ছে। সেই অবরোধে দেশের মানুষের বিন্দুমাত্র সাড়া নেই। দেশের মানুষের সাড়াতো নেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। দেশের মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। সেই কাজকর্মকে ব্যাহত করতে ২৮ অক্টোবর থেকে ক্রমাগতভাবে যেভাবে গাড়ি-ঘোড়ায় আগুন দেওয়া হচ্ছে। গাজীপুরে রেললাইনের ২০ ফুট কেটে দেওয়া হয়েছে। এতে সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে একজন যাত্রী নিহত ও অর্ধশত যাত্রী আহত এবং ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীতে কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, তাদের এই তথাকথিত অবরোধ কোথাও পালিত হয়নি। কিন্তু এ পর্যন্ত সাড়ে তিনশ যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও দেখিনি রাজনীতির নামে গাড়িকে আগুন দেওয়া হয়। গাড়িতে আগুন দেওয়ায় এ পর্যন্ত সাতজন মারা গেছে ও অনেক মানুষ আগুনে দগ্ধ হয়েছে। এই অপরাজনীতি অচিরেই বন্ধ হওয়া দরকার। এটা বন্ধ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। বিএনপি বলছেন তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছেন, গাড়ি-ঘোড়া পুড়িয়ে কি গণতান্ত্রিক আন্দোলন, মানুষ পোড়ানো কি গণতান্ত্রিক আন্দোলন। এভাবে জনজীবন ব্যাহত করে জানমালের ক্ষতি করে কখনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন নয়। এগুলো দেশবিরোধী, সন্ত্রাসী,জনবিরোধী কর্মকাণ্ড। তারা যে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে এগুলো বর্বরতা, হিংস্রতা, যা হিংস্র হায়নাকেও হার মানিয়েছে। তাদের এই অপরাজনীতি চিরদিনের মতো বন্ধ করতে হবে।

জাপার নির্বাচনে আসা নিয়ে কোনো আশঙ্কা রযেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাপার মহাসচিব ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছেন তারা নির্বাচন করার জন্য নমিনেশন জমা দিয়েছেন এবং নির্বাচন করবেন। আমিও বিশ্বাস করি তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভালো ফল করবেন। আর জাপা আমাদের দীর্ঘদিনের সহযোগী গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য তারা সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আজকের পরিস্থিতিতেও জাপা আগের মতো সহযোগী হিসেবে কাজ করবে।  

১৮ তারিখ নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের পর শুধুমাত্র নির্বাচন সংক্রান্ত সভা সমাবেশ করা যাবে অন্য কোনো সভা সমাবেশ করা যাবে না এ ধরনের একটি নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন নির্বাচন কমিশন নানা নির্দেশনা দিচ্ছে। এটি নিয়ে নানা বিচার বিশ্লেষণ বা সিদ্ধান্ত সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবে। নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর প্রকৃতপক্ষে পুরো ক্যানভাসটাই তো নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের যেকোনো নির্দেশনা দেওয়ার অধিকার আছে। সেক্ষেত্রে দেখতে হবে এতে সংবিধানিক অধিকারগুলো কোনো ক্ষুণ্ন হচ্ছে কি না সেটি দেখার বিষয়। তবে নির্বাচন কমিশনের যেকোনো নির্দেশনা দেওয়ার এখতিয়ার আছে।

বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী গুপ্ত জায়গা থেকে যখন-তখন হরতাল অবরোধ ডাকছেন এই সুযোগটা কি সরকার তৈরি করে দিচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার কেন করে দেবে। তিনিতো গুপ্তস্থান থেকে করছে এবং তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টও জারি হয়েছে। সরকার অনেকেইতো খুঁজে পাচ্ছে না। বিএনপির নেতারাতো সবাই এখন গুপ্তস্থানে। রুহুল কবির রিজভীও গুপ্তস্থান থেকে নানা রকমের বক্তব্য দিচ্ছেন। অবরোধের ডাক দিচ্ছেন, অবরোধের নামে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আর লন্ডন থেকে ওয়ার্ডপর্যায়ে ফোন করে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানোর জন্য বলা হয়। আবার সেটির ভিডিও চিত্র ধারণ করে লন্ডনে পাঠাতে হয়। সেটি পাঠালে তার রাজনৈতিক প্রমোশন হয়। যে দলে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ালে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করলে পদের প্রমোশন হয় সেটি তো একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের থেকেও জঘন্য একটি সংগঠন। এদের সম্পর্কে বলতেও আমার ঘৃণা হচ্ছে।

২৮ অক্টোবর বিএনপির পাশাপাশি অন্যান্য সমমনাদল ছিল তারা কিন্তু জড়িত ছিল। তারা কিন্তু প্রকাশ্যে মিছিল মিটিং করছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেখুন ব্যঙ্গ অনেক ছোট কিন্তু তার আওয়াজ অনেক বড়। আমাদের রাজনীতিতেও কিছু দল আছে ব্যাঙ্গের মতো ছোট, কিন্তু আওয়াজ অনেক বড়। তারা নানা ধরনের কথা বলে। আর বিএনপিকেতো কেউ প্রকাশ্যে আসতে নিষেধ করেনি। তারাতো বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের দিন নানা জায়গায় অনুষ্ঠান করেছেন। তারাই না গর্তের মধ্যে লুকিয়ে গেছে। তাদেরকেতো সরকার বা আওয়ামী লীগ বলেনি আপনারা গর্তের মধ্যে ঢুকে যান। যারা অপরাধ করে তারা গাঁ-ঢাকা দেয়। তারা অপরাধ করেছেনতো এজন্য নিজেরাই গাঁ-ঢাকা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩
জিসিজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।