ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে বানরের রুটি ভাগের মতো জাতীয় সংসদের আসন ভাগাভাগি করছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ কংগ্রেস। পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছে দলটি।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি হলে সংবাদ সম্মেলনে এ শঙ্কা প্রকাশ করেন দলটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেন বলেন, আমাদের দল বাংলাদেশ কংগ্রেস ডাব প্রতীকে নির্বাচন করতে ১৪০ জনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ যাচাই-বাছাই শেষে ১২১ জন চূড়ান্তভাবে বৈধ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কংগ্রেস মূলত একটি নির্বাচনমুখী দল বলেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিল। আমরা আমাদের জানমাল, ঘর-বাড়ি, ব্যবসা বাণিজ্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েও শুধুমাত্র একটি গণমুখী দল বলেই নির্বাচনে এসেছি। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মিটিংয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাসে আমরাও একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছিলাম। আমরা মনে করেছিলাম নির্বাচনকালীন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকবে। নির্বাচন কমিশনের সংলাপে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নির্বাচন এসেছি। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে মূলত নির্বাচনের নামে তামাশার খেলা চলছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। আর তাদের এমন নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে সরকার নিয়ন্ত্রিত স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসনের এমন একচোখা নীতি ও আচরণের ফলে কার্যত নির্বাচন কমিশনের সব নির্দেশনাই বাগাড়ম্বর বলে মনে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কারো ক্ষমতার সিঁড়ি হতে নির্বাচনে আসিনি বা কাউকে বৈধতা দেওয়ার লিজ নেইনি। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় মনে হচ্ছে আমরা সরকারের একতরফা নির্বাচনের আয়োজনে বৈধতা দেওয়ার অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছি। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকলে আমাদের মাধ্যমেই তাদের বৈধতা হাসিল হবে। এছাড়া দৃশ্যত মনে হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আমাদের দলীয় জোটের প্রার্থীদের কোনো মূল্যায়ন করছে না।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সরকার তার ক্ষমতাকে আরও দীর্ঘায়িত করতে বানরের রুটি ভাগের মতো যেভাবে সংসদের আসন ভাগাভাগি করছে তাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে আমরা আশঙ্কা করছি। আমরা এ ভাগাভাগির মধ্যে নেই। আমরা চাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে প্রতিশ্রুত পরিবেশ না পেলে বাংলাদেশ কংগ্রেসের শতাধিক প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে আসা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না। তাই জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমরা যেকোনো মুহূর্তে আমাদের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত আপনাদের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজমুল মোর্শেদ, প্রচার ও প্রচারণা সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলু, কৃষি ও খাদ্য বিষয়ক সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ খান, সমাজ সেবা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাইনুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩
এসসি/আরআইএস