ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা

পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে ওপর মহলে জানাবো: হিরো আলম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩
পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে ওপর মহলে জানাবো: হিরো আলম

বগুড়া: বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা, তাকে ধাক্কা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় হিরো আলম বলেন, থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দিইনি।

তবে পুলিশ আমার অভিযোগ মোবাইলে রেকর্ড করেছেন। যদি তারা ব্যবস্থা না নেন আমি ওপর মহলে বিষয়টি অবগত করবো।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকায় নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান হিরো আলম।  

হিরো আলম জানান, আজ আমার প্রচারণার দ্বিতীয় দিন। সারাদিন ভালোই প্রচারণা করেছি। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে নন্দীগ্রামের মুরাদপুর বাজার এলাকায় পৌঁছলে পাঁচ থেকে ছয়জন যুবক আমাদের মাইক বন্ধ করতে বলে এবং আমার হাতে নৌকার পোস্টার দিয়ে প্রচারণা করাসহ সেখান থেকে চলে যেতে বলে। এক পর্যায়ে তারা আমাদের বলে, এখানে শুধু নৌকার প্রচারণা চলবে এখান থেকে দ্রুত চলে যা। পরে বুঝলাম তারা জাসদের মনোনীত নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেনের লোক। প্রতিবারই আমার সঙ্গে তারা গন্ডগোল করে। আমি এবারও নির্বাচনে আসার আগে বলেছিলাম প্রতিবার আমার নৌকার সঙ্গেই গন্ডগোল হয়েছে এবারও তাই হলো।  

তিনি আরও বলেন, বাঁধা প্রদানকারীরা আমাদের ট্রাক থেকে একটি বাঁশ খুলে ফেলে। এসময় আমার সঙ্গে একটা ছেলে ভিডিও করা অবস্থায় প্রতিবাদ করে। তারা ভিডিও করা দেখে মোবাইল ও সঙ্গে থাকা পাওয়ার ব্যাংক কেড়ে নেয়। পরে তারা মোবাইল থেকে সব ভিডিও ফুটেজ ডিলেট করে দেয়। আরেকটা ফোনেও ছিল সেটাও নিয়েছে তারা কিন্তু ফেরত দেয়নি। আমি এ ঘটনা দ্রুত নন্দীগ্রাম থানায় জানালে তারা ফোর্স পাঠায় এবং ওসি নিজেও ঘটনাস্থলে আসেন।

প্রচারণায় নামতেই বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে জানিয়ে হিরো আলম বলেন, এখুনি নৌকার লোকজন প্রচারণায় বাঁধা দিচ্ছে। এরা জানে নির্ঘাত আমার কাছে হারবে। আমি জোর গলায় বলেছিলাম আমি গতবার এই নৌকার লোকেরাই আমাকে জোর করে হারিয়ে দিয়েছিল। এবারও হিরো আলমের আগের মত জোয়ার আছে, আমি মাঠে নামছি, লোকজন বলেছে এবারও হিরো আলমকে চাই এটা দেখে তারা আমাকে আঘাত করার চিন্তা করছে। এদের চিন্তা হিরো আলমকে যদি আঘাত করে মাঠ থেকে সরানো যায় তাহলে তারা মাঠ ফাঁকা পেয়ে যাবে। যতক্ষণ হিরো আলমের নিশ্বাস আছে, ততক্ষণ আপনারা হিরো আলমকে দমাতে পারবেন না, ভোটের মাঠ থেকে সরাতে পারবেন না।  

এক প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, আমি নন্দীগ্রাম থানার ওসিকে বলেছি এ ঘটনায় জড়িতদের কালকের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেন তাহলে ভোটের দিন এদের সাহস আরও বেড়ে যাবে। আমরা এই অন্যায়ের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি জানাই। আমি কোনো লিখিত অভিযোগ দেইনি। তবে পুলিশ আমার অভিযোগ মোবাইলে রেকর্ড করেছেন। যদি তারা ব্যবস্থা না নেন আমি ওপর মহলে বিষয়টি জানাবো।  

নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমগীর হোসাইন বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়েছিলাম। তিনি যে অভিযোগ করেছেন সেরকম কিছু পাইনি। তিনি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বগুড়া-৪ আসনে হলফনামাসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করাসহ নানা ত্রুটির কারণে গত ৩ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান। এর তিন দিনের মাথায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন হিরো আলম। কিন্তু ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি।

এর আগে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একতারা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে ১৪ দলীয় জোটের শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান। এরপর ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এবার তিনি বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে ডাব প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩
কেইউএ/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।