ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোট হবে, প্রত্যাশা আওয়ামী লীগের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৪
শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোট হবে, প্রত্যাশা আওয়ামী লীগের

ঢাকা: আগামীকাল রোববার(৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সার্বিক পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ থাকবে বলে প্রত্যাশা করছে আওয়ামী লীগ। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে এবং মানুষ ভোট দেবে বলেও আশা দলটির নেতাদের।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ সহিংসতা এড়িয়ে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্য নিয়ে প্রচারে নামে। যদিও ইতিমধ্যে মাঠে কিছু সহিংসতা ছড়িয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে নির্বাচনের মাঠে এটাকে অনেকটাই স্বাভাবিক পরিস্থিতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, নির্বাচনে সব সময়ই কম বেশি সহিংসতা হয়, অতীতেও হয়েছে ৷ সেই তুলনায় এবারের নির্বাচনে সংঘাত, সহিংসতা কম হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলেই তারা মনে করছেন এবং এই পরিবেশ, পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলেও আশা করেন তারা।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার ৪ জানুয়ারি নির্বাচনী প্রচার শেষ হয়। এই নির্বাচনী প্রচার চলার সময় গত ১৮ দিনে সারাদেশে বেশ কিছু সহিংস ঘটনা ঘটে। এসব সহিংসতায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। নির্বাচনী প্রচার শুরুর প্রথম দিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে যে উত্তেজনা এবং সহিংস পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল পরবর্তীতে তা অনেকটাই কমে আসে। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু হয় এবং শেষ হয়েছে গত ৪ জনুয়ারি। এ পর্যন্ত শতাধীক স্থানে ছোট বড় বেশ কিছু নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনার কথা জানা গেছে এবং এতে তিন জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন অনেকে।

বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ অধিকাংশ দলে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এবারের নির্বাচনে নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো অর্থাৎ ভোট দেওয়ার হার বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থীদের বাইরে দলের যে কেউকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উৎসাহিত করেছে। এতে কিছু সংকট তৈরি হলেও সার্বিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন ও ভোটার উপস্থিতির ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন।

এদিকে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি কিছু প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগ দেখিয়ে জাতীয় পার্টির ১৭ জন প্রার্থী এর মধ্যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। যদিও সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে ২৬টি আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় সে আসন গুলো থেকে কেউ সরে যায়নি। এই সব আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়ে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ আসন গুলোতে নৌকার কোনো প্রার্থী নেই। তবে অন্য কিছু আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা সরে দাঁড়ালেও নির্বাচনের উপরে এর কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে আওয়ামী লীগ মনে করছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, নির্বাচন প্রতিহত করতে বিএনপি-জামায়াতের গতিবিধি শেষ পর্যন্ত কি হয় সে বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে কিছু উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছিল। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি আর নেই। সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তৎপরতা ও বিভিন্ন পদক্ষেপ, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী সমর্থকদের সতর্ক অবস্থান এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন মুখী প্রবণতার কারণে বিএনপি-জামায়াত পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবং বিপুলসংখ্যক ভোটার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ভোট সুষ্ঠুভাবে হবে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৷ কোন সমস্যা হবে বলে মনে করি না। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশই বজায় আছে। ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। যদিও বিএনপি হরতাল অবরোধ দিলে অগ্নি সন্ত্রাস হয়। তবে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সতর্ক আছে। কোন ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে। তারা ধাওয়া খাবে।

বাংলাদেশ সময় ০১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৪
এসকে/এমএম 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।