ঢাকা: এ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে কারা নির্বাচিত হবে তা নির্ধারণ হয়েছে ঢাকার একটি সর্বোচ্চ টেবিলে এমন মন্তব্য করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, গত তিন দিনে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে শুধুমাত্র একটি কথা বলা হচ্ছে, তা হলো ‘এ নির্বাচন একটা ভুয়া এবং প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে’। মিডিয়ার পাশাপাশি সারাবিশ্বে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো রয়েছে, এখানে আমেরিকা বা যুক্তরাষ্ট্রই বলেন বা জাতিসংঘই বলেন তাদের প্রত্যেকটি বিবৃতি আপনারা পাঠ করুন সেখানে কি বলেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ‘৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রহসনের নির্বাচনের বিষয়ে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, বিএনপির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ জনগণ এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে এটা প্রমাণ করা যে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এ নির্বাচনের মাধ্যমে সেটির প্রমাণ হয়ে গেছে। সরকার যেটাতে বিশ্বাস করে সেটা হচ্ছে একদলীয় বাকশালীয় কায়দায় শাসন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টাইমস ম্যাগাজিন বাংলাদেশ সরকারকে নাম দিয়েছে ‘বাকশাল- টু’।
বিএনপি সরকারের নির্বাচনের নানা কর্মকাণ্ডের ২৫০টি ঘটনার ওপর প্রমাণসহ একটি বই বের করেছি উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, একসঙ্গে ভিডিও ক্লিপও রয়েছে। এ ধরনের আরেকটি ভলিয়ম আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যে জনগণের সামনে আবার উপস্থাপন করব। সবচেয়ে লজ্জা এবং দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এতদিন সরকার ভোট চুরি গোপনে করলেও এ নির্বাচনে সরকার ভোট ডাকাতি করেছে প্রকাশ্যে, ওপেনে। তারা দিনের আলোতে প্রকাশ্যে আলোচনা করেছে, সিট ভাগাভাগি করেছে যে, কে কোন আসন পাবে।
মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করতে পারবে না। বিশ্ববাসীর কাছে আমরা এতদিন যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছি তা সত্য হচ্ছে। এটা প্রমাণ হয়ে গেছে যে এভাবে একটি ভুয়া নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি করে, বিদেশি ক্ষমতা দিয়ে কোনো ধরনের গণতন্ত্র হতে পারে না তা আজকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজকে মৃত এমন মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে এ বাংলাদেশ তৈরি করেছিল। আজকে আওয়ামী লীগ সরকারকে আমরা প্রশ্ন করতে চাই, আওয়ামী লীগ নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে তাহলে কেন তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এ প্রশ্ন শুধু বিএনপির প্রশ্ন নয়, এটা বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রশ্ন। এ প্রশ্ন মানুষ করেছে ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন করার মাধ্যমে। জনগণ শুধু যে ভোটই বর্জন করেছে বিষটা এমন নয়, তারা এ বাকশালী আওয়ামী লীগকেও বর্জন করেছে। সরকারি একটি গৃহপালিত বিরোধী দল রেখেছে। আমরা দেখেছি তারা ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। এ সরকারকে নিজেদের ক্ষমতার মাধ্যমে কুক্ষিগত করে নিয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুক ও যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৪
ইএসএস/জেএইচ