নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, অনেকে ভাবছে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এবার বাংলাদেশের মানুষকে না খাইয়ে মারার ষড়যন্ত্র হবে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নম পার্কে ফতুল্লায় নির্বাচনী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ছয় মাস আগের থেকে বলেছেন, এক ইঞ্চি জায়গাও ফেলে রাখবেন না। তিনি জানেন ক্রাইসিস (সংকট) আসছে। এই ক্রাইসিসে আমাদের ১৯৭৪ সালে ফেলা হয়েছিল। খাদ্যভর্তি জাহাজ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, নির্বাচনের রেজাল্ট শিট আমার হাতে এসেছে। আমাদের কম করে হলেও ২৫ থেকে ৩০ হাজার ভোট নষ্ট করা হয়েছে। অনেকে এসেছে ভোট দিতে, দেওয়া হয়নি। আমি কোনো কেন্দ্রে যাইনি। সারাদিন কবরস্থানে আমার বাবা, মা, দাদা ও ভাইয়ের কবরের সামনে ছিলাম। আমি আমার মন মত এবাদত করেছি। ভোট দিয়ে সোজা রাইফেল ক্লাবে চলে গিয়েছি।
এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি রেজাল্ট শিট অ্যানালাইসিস করছি। আমি নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পাঁচ বছর পর বেঁচে থাকলেও নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা নেই। আমার নেত্রী যা বলবেন তার বাইরে আমি কিছু করতে পারবো না।
ভৌগোলিকভাবে অনেক কিছু ঘটছে জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, মিয়ানমারে বিদ্রোহীরা আমাদের বর্ডারে যেখান দিয়ে রোহিঙ্গা ঢুকে তা দখলে নিয়ে নিয়েছে। এর চেয়ে বেশি খোলামেলাভাবে বলতে পারবো না। আমরা একটা ক্রাইসিসে পড়তে যাচ্ছি। যা হবে দেখা যাবে, আমরা হারবো না। শেখ হাসিনার ওপর আমাদের ভরসা আছে।
তিনি আরও বলেন, আমি নির্বাচন নিয়ে কোনো অফিসারের সঙ্গে কথা বলিনি। আমি বলেছিলাম ফ্রি ফেয়ার নির্বাচন করবো। এই নির্বাচনে আমার ভোট কমাতে চেষ্টা করা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জে আমাদের বিপুল সংখ্যক নারী ভোটারের ভোট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন তো সবার কাছেই মোবাইল ফোন থাকে। বলা হলো ফোন নিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারকে জানাই। কারা দিচ্ছে না? কিছু জায়গায় পুলিশ, কিছু জায়গায় জুডিশিয়াল টিম। অনেক জায়গায় বলা হয়েছে তিন লাখ টাকা দিন। নয়তো ভোট স্লো হয়ে যাবে। আমি তিন টাকাও দেইনি। সে কারণে আমার আট পার্সেন্ট ভোট কম হয়েছে।
শামীম ওসমান বলেন, রাজনীতিতে ধান্ধা করতে আসিনি। ধান্ধা করলে ২০২৩ সালে বাড়ি বন্ধক রাখতে হতো না। কোনো খারাপ লোককে আমি আমার সঙ্গে রাখবো না। সে যেই হোক। আমি আপনাদের কাছে ঋণী হয়ে আছি।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে মাদক বিক্রি হয় না। মাদক থেকে আসে সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং। গতকাল মাসদাইরে একজনের মাথায় কোপ দিয়েছে কিশোর গ্যাং। সেখানে আমাদের এত বড় বড় নেতা থাকা সত্বেও। তারা তো সেলার। ডিলার কে, হয়তো আমার সঙ্গে বসে আছে। আমার ত্যাগী নেতাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সামনে চলে আসে। আমার জন্য দোয়া করবেন, আমাকে একটু সাহায্য করুন। আমি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, হেফাজত, জাতীয় পার্টি বুঝি না। আমরা সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে একটি সংগঠন করছি। নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রত্যাশা নিয়ে এই সংগঠনের নাম হবে ‘প্রত্যাশা’। আপনারা শুধু মানুষকে নিয়ে আসবেন। মানুষ আসবে, আপনারা ফরম ফিলআপ করে দেবেন। ক্ষমতায় কুলালে ওষুধও কিনে দেব। অনেকের টাকার অভাবে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করবো তার লেখাপড়া চালু রাখার।
তিনি আরও বলেন, আপনার এলাকার ভালো মানুষগুলোকে নিয়ে আসবেন। ইমাম, শিক্ষকদের নিয় আসবেন৷ অন্য দল করে করুক৷ সবাইকে ২৭ তারিখ এ কে এম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে নিয়ে আসবেন। পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব না মাদক নিয়ন্ত্রণ করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৪
এমআরপি/এইচএ/