ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

কালো পতাকা মিছিলেও ক্র্যাকডাউনের হুমকি: মঈন খান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
কালো পতাকা মিছিলেও ক্র্যাকডাউনের হুমকি: মঈন খান

ঢাকা: বিএনপির ২৬ এবং ২৭ জানুয়ারি কালো পতাকা মিছিল করলে সরকার ২৮ অক্টোবরের মতো আবারও ক্র্যাকডাউন চালাবে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও আধুনিক রাষ্ট্রের রূপকার এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নব্য বাকশালের মূলোৎপাটনে শহীদ জিয়ার রাষ্ট্রদর্শন’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভাটির আয়োজন করে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।

মঈন খান বলেন, সরকার বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সব সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা যখন শান্তিপূর্ণভাবে লিফলেট বিতরণ এবং গণসংযোগ করেছি সেখানেও এসে সরকার বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এমনকি আমরা গতকাল একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছি, যেখানে আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে কালো পতাকা প্রদর্শন করব। এর বাইরে তো কিছু না। তবে দেখুন আজকেই আমাদের ওপর হুমকি এসেছে। তারা এমনটা বলছে যে, আমরা যদি রাজপথে কালো পতাকা মিছিল করি তাহলে আবারও ২৮ অক্টোবরের মতো আমাদের ওপর হামলা করা হবে। আমরা কোন দেশে অবস্থান করছি।

তিনি বলেন, আমি খোলা মনে সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি আপনারা সঠিক পথে ফিরে আসুন। যদি আপনারা নিজেদেরকে জনগণের দল হিসেবে মনে করেন।

আন্তর্জাতিক বিশ্ব সরকারের অপপ্রচারের কারণে বিএনপিকে এক সময় সন্ত্রাসী সংগঠন ভাবতো এমন মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, সরকার সব সময় বলে আসছে বিএনপি নাকি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। বিএনপি নাকি তালেবান হয়ে গেছে , বিএনপি নাকি ফান্ডামেন্টালিস্ট দল হয়ে গেছে। এমন সব কথা সরকার বহুবার বলেছে। আমার বলতে দ্বিধা নেই, একটা সময় আন্তর্জাতিক বিশ্ব বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন ভাবতো, কারণ সরকারের এমন সব কথা তাদের কাছে বিক্রি করতো। কিন্তু আজকের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বিশ্ব সরকারের এমন কথা আর কিনছে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্ব যদি এসব কথা কিনেই নিতো, তাহলে কিন্তু আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ৭ জানুয়ারির পর পর্যন্ত সরকারের বিপক্ষে কোনো রিপোর্ট করত না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জাতিসংঘসহ প্রতিটা দেশ ২৮ অক্টোবরের ক্র্যাকডাউনের পর থেকে নির্বাচনের পর পর্যন্ত তারা যে বিবৃতিগুলো দিয়েছে সেখানে কোথাও বিরোধীদলকে দায়ী করে কোনো কিছু বলেনি। উল্টো তারা বলছে বাংলাদেশ এক দলীয় শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়াতে পরিণত হচ্ছে।

বিএনপি বিভেদের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, আগামী প্রজন্ম যদি আপনাদের কাছে প্রশ্ন করে লক্ষ প্রাণের বিনিমিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল যে জন্য, সে বাংলাদেশ এখন কেন নেই। এর জবাব আপনারা কি দেবেন। জনগণের এখন সরকারকে প্রশ্ন করতে হবে কেন এ সরকার দেশ থেকে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বিদায় করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ কি এ বাংলাদেশ চেয়েছিল, এ প্রশ্ন এখন জনগণের করতে হবে। আমরা বিভেদের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা চাই সবাই মিলে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব।

সরকার ক্ষমতার ও অর্থলোভের মোহে আছে, এভাবে দেশ চালানো যায় না' এমন মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, এ সরকারের আজকে চাওয়া বেগম পাড়া, গুলশাম ২-৩ এবং সেকেন্ড হোম। সরকার যা চাইছে সবই তো সরকার পেয়েছে। আর কি চায়। সরকারের এমন আচরণে বলতে হয়, তারা কি চায় এ দেশের সব মানুষের কণ্ঠরোধ করে রাখবে। এদেশে মানুষের কথা বলার কোনো অধিকার নেই, এদেশে তারা থাকতে পারবে না। এটাই কি সরকার চায়। তবে আমরা একটা কথাই বলব, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে হবে। এটাই শেষ কথা। আমরা আন্দোলনে আছি এবং থাকব। আমরা মানুষের মাঝে বিভাজন চাই না।

আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন ইউট্যাব এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পেশাজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরীসহ ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের অন্যান্য সদস্যারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫  ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২,  ২০২৪
ইএসএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।