ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

আমরা ক্ষমতা অর্জনকে মুখ্য মনে না করে নীতির পরিবর্তনে কাজ করি: মাসুম বিল্লাহ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
আমরা ক্ষমতা অর্জনকে মুখ্য মনে না করে নীতির পরিবর্তনে কাজ করি: মাসুম বিল্লাহ

নারায়ণগঞ্জ: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেছেন, আমাদের স্বাধীনতা আক্ষরিক অর্থেই রক্তে কেনা। কথা ছিল, দেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে।

বৈষম্য দূর হবে। দুর্নীতি, দুঃশাসন মুক্ত দেশ গঠন হবে। এদেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিঃসৃত শাসনতন্ত্র হবে। কিন্তু স্বাধীনতার পর দেখা গেল, রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে কোনো ধরনের জনমত যাচাই না করেই ভিনদেশিদের অন্ধ অনুসরণ করা হলো। ফলশ্রুতিতে রাষ্ট্রের বিকাশ হুমকির মুখে পড়লো। শিল্প বিকাশ থমকে গেলো। আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়লো। রাজনীতি হয়ে পড়লো আদর্শহীন, পেশিশক্তি ও কালো টাকা নির্ভর।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ দাওয়াতী পক্ষ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা ৭১ কে ধারণ করি। অসহায়, মজলুম ও গণমানুষের জন্য সংগ্রাম করি এবং এদেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস ও ইসলাম নিঃসৃত নীতিতে নারীর উন্নয়ন ও মুক্তির আন্দোলন করি। দেশের সব ধর্মের ও বিশ্বাসের মানুষের অধিকার এবং নিরাপত্তায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকি। আমরা সংঘাত নয়: বরং শান্তিপূর্ণ রাজনীতি করি। আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করি। আদর্শ সমাজ গঠনের চেষ্টা করি। আমরা শুধু ক্ষমতা অর্জনকেই মুখ্য মনে না করে নীতির পরিবর্তনে কাজ করি।

এতে সেক্রেটারি সুলতান মাহমুদের সঞ্চালনায় সহযোগী সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে বক্তব্য রাখেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মাওলানা হাবিবুল্লাহ হাবিব ও ইসলামী ছাত্র  আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুহাম্মদ ওমর ফারুক।

এ সময় শ্রমিক নেতা মাওলানা হাবিবুল্লাহ হাবিব বলেন, রক্তে কেনা স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রান্ত হলো কিন্তু এখনো দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করছে। ৪৭ শতাংশ উচ্চ শিক্ষিত বেকার। মাত্র ১ শতাংশ লোকের হাতে জাতীয় আয়ের সিংহভাগ কুক্ষিগত হয়ে আছে। গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে সুচিকিৎসা যেন সোনার হরিণ। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা। অবাধে খুন, গুম ও বিনা বিচারে হত্যাসহ আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতিতে দেশে সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা আজ প্রকট। মাদক, সন্ত্রাস ও নারী নির্যাতনসহ সব ধরনের অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে লাফিয়ে-লাফিয়ে। শাসক শ্রেণি জনগণের ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা এবং মুক্ত ও গঠনমূলক রাজনৈতিক অধিকারের মতো মৌলিক অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। সবশেষে তারা শিক্ষা ব্যবস্থার উপর আঘাত করে ধর্মীয় মূল্যবোধসহ জাতির মেরুদন্ড ভেঙে দেওয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে।

ছাত্রনেতা ওমর ফারুক বলেন, কেন এ পরিস্থিতি? মাত্র ৯ মাসে যে জাতি স্বাধীনতা অর্জন করে, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও তাদের কেন এ দুর্গতি? এই দুর্গতির প্রধান ও একমাত্র কারণ হলো, এদেশের বোধ-বিশ্বাস, ইতিহাস-ঐতিহ্য বিবর্জিত মানবরচিত ধার করা শাসন নীতি। আমাদের বিশ্বাস, দেশের এ ক্রান্তিকাল উত্তরণে ইসলামই একমাত্র সমাধান।

তিনি আরও বলেন, মানুষ শান্তি-মুক্তি চায়; কিন্তু ক্ষমতাসীনদের দুঃশাসনে আজ দেশবাসী দিশেহারা। আল্লাহ প্রদত্ত জীবনব্যবস্থা উপেক্ষা করে মানবরচিত মতবাদের অনুসরণের কারণেই আমাদের এ পরিণতি। তাই আসুন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, দেশের স্বার্থরক্ষা এবং ঈমানি দায়িত্ব পালনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পতাকাতলে শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই সমবেত হই। ন্যায় প্রতিষ্ঠার এ সংগ্রামে আল্লাহ তায়ালা আমাদের কবুল করুন, আমীন।

পরিশেষে নগর সভাপতি আগামী ২৮, ২৯ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ ঐতিহাসিক চরমোনাই বার্ষিক মাহফিলে উপস্থিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
এমআরপি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।