যশোর: যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় (এম এম কলেজ) শাখা ছাত্রদলের এক কর্মীকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার ছাত্রদল কর্মীর নাম কানোয়ার হোসেন (২৪)। তিনি কলেজের অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত ছাত্রদল কর্মী কানোয়ার বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পিকনিকে যাওয়ার কথা রয়েছে। আমি ও বন্ধুরা সেই পিকনিকের টিশার্ট আনতে কলেজের ডিপার্টমেন্টে যাই। ক্যাম্পাসে পৌঁছালে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের কর্মী রবিউল ইসলাম ও এনামুল ইসলাম আমাকে ডাকে। এর পর ক্যাম্পাস ছাত্রদলের সভাপতির সঙ্গে থাকা আমার একটি ছবি দেখিয়ে ওরা বলে, ‘তুই ছাত্রদল করিস’। এই বলে কলেজের ছাত্র কমন রুমে নিয়ে যায় আমাকে। এর পর কমন রুমের ভেতর ঢুকে দরজা বন্ধ করে ৮-১০ জন মিলে মারতে শুরু করে। একপর্যায়ে কমনরুমের বাথরুমে নিয়ে স্ট্যাম্প দিয়ে মারে। খবর পেয়ে কলেজের স্যাররা এলে দক্ষিণ গেটে নিয়ে গিয়ে সেখানেও দ্বিতীয় দফায় মারধর করে। মারধরের সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলে ‘তুই যদি ছাত্রদলের প্রোগ্রামে যাস, তোরে মেরে ফেলবো। গুলি করে মারবো। ’
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত ওই শিক্ষার্থীর বন্ধুরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কানোয়ারকে মারতে দেখে আমরা কয়েকজন বন্ধু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাত পা জড়িয়ে ধরে ওরে মাফ করে দিতে বলি। তারপরেও তারা মারা থামায়নি। কয়েকটা স্ট্যাম্প ভেঙে ফেলেছে মারতে মারতে। এর পর আবার এক গলিতে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় কাঠ দিয়ে মারধর করেছে। '
আহত ছাত্রদল কর্মীর খালা সালমা খাতুন বলেন, গ্রাম থেকে শহরে পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছি ছেলের ভবিষ্যত গড়ার জন্য। কানোয়ার সক্রিয় রাজনীতি করে না। ক্যাম্পাসে যদি ছাত্রদের নিরাপত্তা না থাকে তাহলে কি হবে। এইভাবে মানুষ মানুষকে মারতে পারে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রদল কর্মীর চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে আসেন কলেজ ও জেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ রাজনীতি করে না। সারাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগের নেতারা অছাত্র দিয়ে সংগঠন চালাচ্ছে। ক্যাম্পাসে ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে। এই গণতান্ত্রিক দেশে সবাই ছাত্ররাজনীতি করতে পারে। এর আগেও এম এম কলেজের কর্মসূচিতে হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এই দায় কলেজ প্রশাসনকে নিতে হবে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবীর পিয়াস বলেন, এমএম কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি নেই। এছাড়া খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এ ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নেই।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
আরএ