ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ভারত সরকার বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশার মর্যাদা দেবে, আশা ফখরুলের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৪
ভারত সরকার বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশার মর্যাদা দেবে, আশা ফখরুলের

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,  আমাদের আশা ভারতের সরকার বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, সেটির মর্যাদা দেবে।

সোমবার (১০ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ গভীর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। একদিকে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ আছে, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ আছে। এখন একটা ভৌগোলিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। পানি আমাদের অধিকার। আমাদের ভেতর ভিন্ন দেশের যে নদীগুলো প্রবাহিত হচ্ছে। পানির অধিকার সর্বজনীন স্বীকৃত। এ অধিকার থেকে আমাদের কেউ বঞ্চিত করতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, আমাদের প্রতিবেশী দেশ, যাকে আমরা বন্ধু মনে করি, তারা আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে ক্রমাগত বঞ্চিত করছে।

ফারাক্কার পানি নিয়ে বহু খেলা হচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে অথচ তারা তিস্তার পানি চুক্তির বিষয়ে কথা বলে না। এখন তারা নতুন কথা বলছে। বলছে তিস্তা প্রকল্প। পানি চুক্তি বিষয়ে কিছু না করে সরকার বলছে, তিস্তা প্রকল্পে চীন সহযোগিতা করতে চায়। আবার বলছে, ভারত সহযোগিতা করতে চায়। আমার কাছে বিষয়টা বিস্ময়কর মনে হয়েছে। কিছুটা রহস্য যেন মনে হয়েছে। যার কাছ থেকে পানি পাই না, তারা আমাদের তিস্তা প্রকল্পে সহযোগিতা করবে কীভাবে? এটা আমার মাথায় আসে না।

‘বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লংমার্চ করার ফলে আমাদের এমপি ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হয়েছেন’ এমনটা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, জনগণের প্রতিরোধের মুখে সেই টিপাইমুখ বাঁধ এখন বন্ধ আছে।

আন্দোলন না করলে কিছুই পাওয়া যাবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আমাদের যে সরকার আছে, তারা তো প্রতিবেশীর কাছে পুরোপুরি মুখাপেক্ষী। বর্তমান সরকার নতজানু সরকার, তারা কোনমতেই ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় না। ভারতের বিরুদ্ধে বলছি না, যেগুলো আমাদের জনগণের ইন্টারেস্ট আছে, সেগুলো নিয়ে তো কথা বলতেই হবে।

জলবায়ুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা খুবই ভয়াবহ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গবেষণা বলছে, ঢাকা হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় দূষিত শহর অথচ আমরা সেই শহরেই বসবাস করছি। সবাই প্রচণ্ড রকমের একটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন ক্ষণজন্মা মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক, তিনি শুধু স্বপ্নদ্রষ্টা নন, সেই স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়িত করার জন্য অল্প সময়ের মধ্যেই কাজ করেছেন। এটা অবিশ্বাস্য, যাকে একটা মানুষও চিনতেন না, ১৯৭১ সালে হঠাৎ ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনগণকে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করলেন। তাকে অস্বীকার করা যাবে না। এটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না। আমি তাদের (বিরোধী পক্ষ) ছোট করতে চাই না, সংগ্রামকে ছোট করতে চাই না। কারো অবদানকে ছোট করে দেখতে চাই না। জিয়াউর রহমানের যে অবদান, আমরা বারবার বলব, সেটি ধ্রুব সত্য। জিয়াউর রহমানকে অস্বীকার করা মানেই স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা।

আজকের আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিল। এ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই তাদের কেমিস্ট্রিতে পরিবর্তন দেখা যায়। সেই পরিবর্তনটাই হচ্ছে, তখন তারা সর্বগ্রাসী হয়।

সাধারণ মানুষ তো শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোথায় যাবে তারা? বিচার নাই। ব্যবসা করতে গেলে কোনো সুযোগ পাবে না, ঘুষ ছাড়া কেউ কথা বলে না।

ভারতের নতুন সরকারের কাছে আমাদের একটাই আশা। সে দেশের জনগণ যেভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে, তাদের নির্বাচন কমিশন এখনো যেভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তাদের বিচার বিভাগ যেভাবে কাজ করতে পারে; ১৯৭১ সালে এ দেশের মানুষ সেই লক্ষ্য নিয়ে যুদ্ধ করেছিল। ভারতের সরকার বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, সেটির মর্যাদা দেবে, সেভাবেই তারা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৪
টিএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।