ঢাকা: দেশে গুজব ছড়িয়ে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে ১৯৯০-এর গণতন্ত্র হত্যাকারী এরশাদবিরোধী আন্দোলনের অগ্রসেনানী শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের ৩৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় নজরুল এ কথা বলেন। ৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য এ সবার আয়োজন করে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, ওদের ( আওয়ামী লীগ) পক্ষে দেশে-বিদেশে শক্তি আছে, ওদের অনেক টাকা-পয়সা আছে, তারা নানাভাবে চেষ্টা করতে পারে আমাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির, সেটা যেন করতে না পারে।
তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, শহীদ জেহাদ থেকে আরম্ভ করে এর আগের এবং পরের যারাই আমাদের ভাই-বোনরা শহীদ হয়েছেন, যারাই আমাদের ভাই-বোনরা গুম হয়েছেন, তাদের রক্ত কিংবা তাদের স্মৃতির প্রতি আমাদের দায় পরিশোধ করতে হবে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা যারা বেঁচে আছি, আমাদের দায়িত্ব হলো শহীদদের স্মৃতি মনে রাখা এবং যা তারা চেয়েছিলেন, যার জন্য জীবন দিয়েছেন, সেটা অর্জন করা। আর সেই অর্জন করার পথে যে কোনো বাধা আসলে সেই বাধাকে আমাদের অতিক্রম করতে হবে। অতিক্রম করতে হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে।
রাজনীতিতে জনগণের চেয়ে বেশি শক্তিশালী আর কেউ নেই উল্লেখ করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আল্লাহর মেহেরবানীতে সেই জনগণের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা আছে শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের। বিপুল জনপ্রিয়তা আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের। কাজেই আমাদের উচিত জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা, তাদের কল্যাণের জন্য কাজ করা।
অনৈক্য সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এমনও আছে যাদের আমরা হয়তো চিনতে ভুল করছি। মনে হচ্ছে আমাদের পক্ষে। ওই লোকগুলো আমাদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করার মতো শ্লোগান দেয়, অনৈক্য সৃষ্টি করার মতো কথা বলে। যাতে করে স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে যারা বা যে শক্তি, তাদের মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, আরেকটা উদ্দেশ্য আছে তাদের। তারা জানে যে, এদেশের জনগণের মন-মানসে বিএনপির অস্তিত্ব এতোই প্রসারিত, এতোই গ্রোথিত হয়ে আছে যে, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের সম্ভাবনা খুব কম। অতএব বিএনপিকে হেয় করা যায় কীভাবে, বিএনপির জনপ্রিয়তাকে নষ্ট করা যায় কীভাবে, বিএনপির দুর্নাম করা যায় কীভাবে; এরকম ষড়যন্ত্রে কেউ কেউ লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করছে।
বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ্য করে নজরুল বলেন, আমরা সবাইকে অনুরোধ করব, আমরা পরস্পর শত্রু নই। আপনার অতীতও জনগণ জানে, আমার অতীতও জনগণ জানে। আগামী দিনে যখন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে জনগণ নির্ধারন করবে কাকে তারা তাদের কল্যাণের জন্য দায়িত্ব দেবে আগামী দিনের সরকার পরিচালনার।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, দুর্গোৎসব চলছে। আমাদের দায়িত্ব যাতে করে সেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদেরও আছে। কারণ কিছু মানুষ আছে, যারা চক্রান্ত করে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আমাদের দেশের বদনাম করার চেষ্টা করবে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় নব্বইয়ের সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে আসাদুজ্জামান রিপন, সালাহউদ্দিন আহমেদ, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, কামরুজ্জামান রতন, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান আসাদ, মীর সরাফত আলী সপু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, ছাত্রদলের সভাপতি রকিবুল ইসলাম রাকিব ও শহীদ জেহাদের বড় বোন চামেলী মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
ইএসএস/এইচএ/