ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছাত্রদের ওপর যেসব ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মী বন্দুক দিয়ে গুলি চালিয়েছে, তাদের এখনো কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? যারা আবু সাঈদ, মুগ্ধ,ফয়েজকে হত্যা করেছে তাদেরকে আপনারা খুঁজে পাবেন না এটা কেমন কথা? আপনারা যদি এদেরকে আইনের আওতায় না আনেন তাহলে তারা আরো বড় ধরনের নাশকতা করবে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক দেশে ফিরলে তাকে সঙ্গে নিয়ে জিয়াউর রহমানের মাজারে যান রিজভী এবং সেখানে ফাতেহা পাঠ করেন।
এ সময় রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ভারতে গেছেন। ভারত তাদের পাসপোর্ট চেক করেনি। তাদের ভিসাও লাগেনি। অথচ বাংলাদেশের অন্য মানুষ ভারতে গেলে তাদের তো পাসপোর্ট-ভিসা লাগে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যকে র্যাব-পুলিশ বাংলাদেশে দুই মাস গুম করে রাখার পরে ভারতে ফেলে দিয়ে এসেছিল। সেখানে তার মামলা ফেইস করতে হয়েছে, জেল খাটতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ভারত আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ। সে দেশে গণতন্ত্র আছে। তারা কি করে বাংলাদেশকে এক চোখে দেখে? তারা জনগণকে অবজ্ঞা করে, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা করে। তারা অতিথি হিসেবে গ্রহণ করেছে দুনিয়ার সবচেয়ে ঘাতক রাজনীতিবিদ শেখ হাসিনাকে।
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দুর্গাপূজার আজ দশমী শেষ দিন। এত সুন্দর ও শান্তশিষ্টভাবে এই আয়োজনের সবকিছু পালিত হচ্ছে। কারণ, সরকারের আন্তরিকতা ছিল এবং দেশের গণতন্ত্রমনা বিশেষ করে বিএনপি এবং অন্যান্য দলগুলো দিনরাত পাহারা দিয়েছে। অথচ পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের মিডিয়ায় নানা ধরনের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
বাংলাদেশ শতাব্দীর পর শতাব্দী থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অভূতপূর্ণ শান্তিপূর্ণ দেশ দাবি করে দিনি বলেন. শুধু এ দেশকে কলঙ্কিত করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বারবার তার এজেন্ট দিয়ে মন্দিরে হামলা করিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলেছে ভারতের নীতি-নির্ধারকরা। কারণ তাদের বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব দরকার নাই। তাদের দরকার শেখ হাসিনার বন্ধুত্ব। তাদের দরকার ওবায়দুল কাদেরের বন্ধুত্ব। তাদেরকে দিয়ে বাংলাদেশে কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চায়। এখন ভারতের মানুষ দেখুক বাংলাদেশের মানুষ কতটা শান্তিপ্রিয় ও গণতন্ত্রকামী।
এ সময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ডা. জাহিদুল কবির, যুবদলের নেতা মেহেবুব মাসুম শান্তসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৯ বছর পর দেশে ফিরেছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ মালিক। রোববার দুপুরে তাকে স্বাগত জানাতে এদিন বিমানবন্দরের প্রবেশপথসহ ভিআইপি কর্নারে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল নামে।
পরে আব্দুল মালিক বিমান থেকে নেমে আনুষ্ঠানিকতা শেষে সংবর্ধনাস্থলে এসে বিগত স্বৈরাচার সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের মাগফিরাত কামনা করেন এবং যারা আহত হয়েছেন সেই আহত পরিবারগুলোকে সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৪
টিএ/এসএএইচ