বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা ৩১ দফা সংস্কারের কথা বলেছি। ৫০টির বেশি রাজনৈতিক দল এ ঐকমত্যে আমাদের সঙ্গে আছে।
প্রশ্ন: বর্তমানে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক অবস্থাটা আসলে কী? কেমন চলছে দেশের অর্থনীতি?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে মূল বিষয় হচ্ছে- গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়া। বিগত ১৫-১৬ বছরের আন্দোলনটাই ছিল জনগণের অধিকার, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি, লুটপাট এসবের বিরুদ্ধে। মূলত সবকিছুর মূলে ছিল একটি অনির্বাচিত অবৈধ দখলদার সরকার। যেহেতু অনির্বাচিত ছিল, জনগণের ভোট বিএনপির প্রতিশ্রুতি জাতীয় সরকারছিল না, সেহেতু স্বৈরাচার বা ফ্যাসিস্ট সৃষ্টি হয়েছে। সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার হতে হবে। যে সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ হবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে আগামী দিনের নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম, যারা গত তিন-চারটি নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। ভোটাধিকার না থাকায় যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তার কারণেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য জনগণ তাদের ভোটাধিকার চায়, তাদের মালিকানা ফিরে পেতে চায়। নির্বাচিত সংসদ ও সরকার দেখতে চায়। মোট কথা জনগণ একটা জবাবদিহিমূলক সরকার চায়। একটি ফ্রি ফেয়ার ইলেকশনের মাধ্যমেই জবাবদিহিমূলক সরকার ও সংসদ গঠন এবং গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে। এর মধ্যে কিছু সংস্কারের প্রয়োজন আছে। তবে সংস্কারটা হলো একটি চলমান প্রক্রিয়া। সে সংস্কারগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হতে হবে। কারণ সংস্কার তো ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নয়। কোনো গোষ্ঠীরও বিষয় নয়। সংস্কার হচ্ছে- দেশের জন্য এবং সংস্কার প্রক্রিয়া জনগণের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে হতে হবে। যেসব বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য হয়ে গেছে সেসব বিষয়ে দ্রুত সংস্কার সম্পন্ন করা যেতে পারে। আর যেগুলো হয়নি বা দ্বিমত আছে, সেগুলো পরবর্তী সময়ে ভোটে নির্বাচিত সরকার এসে করতে পারে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদের মাধ্যমে সেই পরিবর্তনগুলো আনা সম্ভব।
প্রশ্ন: অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক নির্বাচনি রোডম্যাড ঘোষণার বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: নির্বাচনের ব্যাপারে এ সরকারকে সময় বেঁধে দিয়ে কোনো চাপ সৃষ্টি করতে চাই না। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করছি। আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়েছি। তারা যাতে সবার সহযোগিতা নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটা নির্বাচিত সরকারের কাছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারে, সেটিই হলো আজকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
প্রশ্ন: সরকারের সংস্কার কার্যক্রমকে কীভাবে দেখছেন? আপনার দল কোন কোন বিষয়ে সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: এখন যে সংস্কারের আলোচনা হচ্ছে তার বহু আগে আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি। দেড় বছর আগে প্রথমে ২৭ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিলেও পরবর্তী সময়ে দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ৩১ দফা দিয়েছি। তারও ছয় বছর আগে বিএনপি ভিশন-২০২৩-এর মাধ্যমে সংস্কারের কথা বলেছে। এটা নিয়ে ভাবার কিছু নেই। বাংলাদেশের সবাই জানে যে দেশে সংস্কার করতে হবে। কিছুটা দ্বিমত থাকতেই পারে। কারণ বিভিন্ন দলের বিভিন্ন রকমের চিন্তাভাবনা থাকে। তবে আমার মনে হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা সবাই একমত হয়েছি। কাজেই নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় যে সংস্কারগুলো করা দরকার সেগুলো শেষ করে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। আর সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। আজকে যে সংস্কার হবে আগামী এক বছর পর সে সংস্কার বাতিলও করতে হতে পারে। তবে সংস্কারটা করতে হবে সময়োপযোগী এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়।
প্রশ্ন: নির্বাচনের পর বিএনপি জাতীয় সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। এটি কীভাবে সম্ভব?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: আমরা ৩১ দফা সংস্কারের কথা বলেছি। যুগপৎ আন্দোলনে আমরা যারা আছি তাদের মধ্যে এ বিষয়ে ঐকমত্য আছে। এর বাইরের রাজনৈতিক দলগুলোও যোগ হয়েছে। তাদের সঙ্গেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটা ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। সুতরাং এখানে জাতীয় ঐকমত্যের একটা বিষয় রয়েছে। ৫০টির কাছাকাছি দল এ ঐকমত্যে আমাদের সঙ্গে আছে। কাজেই বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে যে নির্বাচনের পর আমরা সবাই মিলে একটা জাতীয় সরকার গঠন করব। আমরা যারা ৩১ দফার সঙ্গে আছি এবং আলাপ-আলোচনা করে তৈরি করেছি তারা সবাই মিলে সেগুলো বাস্তবায়ন করব। এটি একটি বিরাট কমিটমেন্ট। এটা জাতির কাছে বিএনপির প্রতিশ্রুতি। আমরা কতটা সিরিয়াস তারই প্রতিফলন।
প্রশ্ন: জাতীয় নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো কতটা প্রস্তুত? অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন উচিত হবে কিনা?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: এটা হচ্ছে ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার মতো অবস্থা। দেশে কোনো নির্বাচিত সরকার হচ্ছে না, আর আপনি যাবেন লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশনে। এখানে নির্বাচিত সরকারের অধীনে লোকাল গভর্নমেন্ট নির্বাচন আর ইনটেরিম গভর্নমেন্টের অধীনে লোকাল গভর্নমেন্ট নির্বাচন- এর মধ্যে অনেক ব্যবধান আছে। সুতরাং নির্বাচনের মাধ্যমে যারা সরকার গঠন করবে তারাই এ লোকাল গভর্নমেন্ট নির্বাচন দেবে। তা ছাড়া এ নির্বাচন দিতে গেলে অনেকটা সময়ও চলে যাবে। কারণ লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশন তো অনেকগুলো। এগুলো স্তরে স্তরে করতে হবে। দেশে নির্বাচিত সরকার গঠন করাটাই হচ্ছে এই মুহূর্তের দাবি। সুতরাং জাতীয় সরকার গঠনের পর এটি ধীরস্থিরভাবে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা যাবে।
প্রশ্ন: বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবিধান পরিবর্তনের কথা উঠছে। আপনি কী মনে করেন?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: সংবিধান পরিবর্তনের কথা তো সবাই বলছে। যেসব জায়গায় সবার ঐকমত্য আছে সেসব জায়গায় পরিবর্তন করা যেতে পারে। আর যেসব জায়গায় ঐকমত্য নেই সেগুলো নির্বাচিত সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে করবে। পরবর্তী সংসদের জন্য রেখে দিতে হবে।
প্রশ্ন: পুলিশ বাহিনী, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশনকে কীভাবে পুনর্গঠনসহ কার্যকর করা যেতে পারে?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে, এখন সেটি এবং নির্বাহী বিভাগের যাঁরা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কাজ করবেন তাঁরা সবাই যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ বাহিনী এবং বিচার বিভাগকে সেভাবেই স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে। অবশ্য এজন্য বেশ কিছু সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে।
প্রশ্ন: ছাত্র-জনতার আন্দোলন কীভাবে দেখেন? এতে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর অবদান কতটুকু?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: বিএনপির আন্দোলন তো ১৬-১৭ বছর ধরেই চলতেছে। ১৬ বছর ধরে বিএনপির ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে লাখ লাখ মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে। অনেককে হত্যা করা হয়েছে। গুম করা হয়েছে। অনেকে পঙ্গু হয়েছে। পুলিশ কাস্টডিতেও চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। বাড়িঘর, ব্যবসাবাণিজ্য হারিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকেও লড়াই করছেন। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য তাঁকে অন্যায়ভাবে জেলে পাঠানো হয়েছে। সেখানে চিকিৎসার সুযোগ পর্যন্ত তাঁকে দেওয়া হয়নি। সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার। ওনার শক্ত ও অটল অবস্থানের ফলে জাতি সাহস পেয়েছে এবং দাঁড়াতে পেরেছে। বিএনপির ওপর এত নির্যাতন-নিপীড়ন করেও বিএনপিকে থামাতে পারেনি। বিএনপি নেতা-কর্মীদের যে ত্যাগ-তিতিক্ষা তা বলে শেষ করা যাবে না। গত ১০-১৫ বছর নির্যাতন-নিপীড়নের পরেও বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী দল ছেড়ে যায়নি। এমন একটি দল আর একটিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর বিদেশে থেকেও যে নেতৃত্ব দেওয়া যায় এবং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা যায় এবং মোটিভেট করা যায় তার প্রমাণ তারেক রহমান নিজে। তাঁর যে ত্যাগ ও অবদান সেটিও অনস্বীকার্য। কারণ তিনি দিনরাত পরিশ্রম করে অনলাইনে বৈঠক করে যেভাবে দলটাকে আজকের এ অবস্থানে নিয়ে এসেছেন, তা অতুলনীয়।
প্রশ্ন: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী দিনের নির্বাচন ও রাজনীতি দুটোই বিএনপির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। আপনি কি মনে করেন?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: কঠিন চ্যালেঞ্জ তো বটেই। বাংলাদেশকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা নির্বাচন, আন্দোলন, সবকিছুকেই অস্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে গেছেন। রাজনীতিকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
সেখান থেকে বের হতে হলে সেই পুরনো ধাঁচের রাজনীতি নিয়ে থাকলে চলবে না। নতুন ধারা তৈরি করতে হবে। আর সেটি তারেক রহমান করেছেন ইতোমধ্যেই। আর বিএনপি সেটা ধারণও করেছে। এজন্য আমরা সঠিক পথে চলছি। আশা করি আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের গুণগত পরিবর্তন আসবে।
প্রশ্ন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান। এটাকে কীভাবে দেখেন?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: এটা সবার অধিকার। শুধু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন, আরও যে কেউ চাইলে করতে পারে। আমরা স্বাগত জানাই সবাইকে। আমরা গত ১৬-১৭ বছর যে জন্য লড়েছি শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে সেটি ছিল রাজনীতির জন্য, মানুষের কথা বলার অধিকারের জন্য, বাকস্বাধীনতার জন্য। শত ফুল ফুটুক। এটা তো ভালো। এ স্বাধীনতার জন্যই তো আমরা এত দিন লড়াই করেছি।
প্রশ্ন: আনুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী। আপনি বা আপনার দল একমত কিনা?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: আনুপাতিক হারে তো প্রশ্নই ওঠে না। আমরা যে ওয়েস্ট মিনস্টার ডেমোক্র্যাসি প্র্যাকটিস করি, এটা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। রাজনৈতিক সংস্কৃতি যেটা আছে, সেই ধারাতেই চলতে হবে।
প্রশ্ন: আপনি তো দেশের ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ছিলেন। দেশের ব্যবসাবাণিজ্য বর্তমানে কেমন চলছে? ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে কোথাও কোথাও মামলা হচ্ছে। বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: গত ১৫-১৬ বছরে তো ব্যবসাবাণিজ্য করতে দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক কাঠামো একেবারে ভেঙে পড়েছে। মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যে মডেলে তারা অর্থনীতি চালিয়েছে সেটি আওয়ামী মডেল। লুটপাটের মডেল। দেশের ব্যাংকে টাকা নেই। শেয়ারবাজার ধ্বংস করে দিয়েছে। রিজার্ভ একবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এটা থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন। তবে সম্ভব। যদি জাতি হিসেবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারি। মামলা তো হতেই পারে; কিন্তু দেখতে হবে তার পেছনে যৌক্তিক কারণ আছে কিনা? মামলার মেরিট কতটুকু? অহেতুক বা প্রতিহিংসাবশত মামলা হয়েছে কিনা?
প্রশ্ন: দেশ-বিদেশ থেকে ষড়যন্ত্র চলছেই। চক্রান্ত থেমে নেই। এর সমাধান কী?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তাঁর দোসররা এখনো রয়ে গেছে। প্রশাসনেও রয়েছে। এগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে হবে। এদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। পুরো জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে তারা তেমন কিছুই করতে পারবে না। এজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
প্রশ্ন: বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল কবে নাগাদ অনুষ্ঠিত হবে?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: জেলা-উপজেলাসহ বিভিন্ন স্তরে দলের সম্মেলন ও কমিটি হচ্ছে। সেগুলো শেষ হলেই জাতীয় কাউন্সিলের আয়োজন করা হবে।
প্রশ্ন: বর্তমান সরকারের কাছে মূল প্রত্যাশা কী?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: মূল প্রত্যাশা একটাই। এ অন্তর্বর্তী সরকার যত তাড়াতাড়ি একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এ ট্রানজিশনাল পিরিয়ডের ইতি টেনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবে, দেশ ও জাতির জন্য ততই মঙ্গল।
প্রশ্ন: শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনার দাবি উঠছে। আপনি কি মনে করেন?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বাইরে থেকে এনে বিচার করার দাবিটা তো আমি বাতিল করতে পারি না।
সুতরাং তাঁর নিজের থেকেই তো ফিরে আসা উচিত। দাবি উঠবে কেন? তাঁর যদি সেই সৎ সাহস থাকে, তাহলে তাঁর নিজের থেকেই ফিরে এসে ফেস করা উচিত। এখন তো দেশে বিচার আছে। আগে তো বিচার ছিল না। এখন তো দেশে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা চলছে।
প্রশ্ন: দেশ ও জনগণ এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আপনার আহ্বান কী?
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: জনগণ দেশের মালিকানা ফিরে পেতে চায়। তাদের নাগরিক অধিকার ফিরে পেতে চেয়েছে। আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আশা করি দেশের স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকব।
সৌজন্য: বাংলাদেশ প্রতিদিন
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৪