বগুড়া: সদ্য ঘোষিত বগুড়া জেলা যুবদলের কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি মহল সক্রিয়ভাবে গুজব ছড়াচ্ছে। ফেসবুকে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় যুবদল থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সভাপতি ও আবু হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে কমিটিতে স্থান পাওয়া কয়েকজন নেতাকে নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কমিটিতে স্থান পাওয়া সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবীব সেলিম, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সুজাউল ইসলাম সুমন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. ইনছান (ইনছান আলী) ও সহ-কর্মসংস্থান সম্পাদক মাসুদ রানা এ চারজনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছে একটি মহল।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা সবাই দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদল ও যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন।
আহসান হাবীব সেলিম বগুড়া গাবতলী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য এবং দক্ষিণপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। সুজাউল ইসলাম সুমন পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। মো. ইনছান (ইনছান আলী) বগুড়া জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আঞ্চলিক কমিটির সাবেক সভাপতি ছিলেন। মাসুদ রানা বগুড়া জেলা যুবদলের সাবেক সদস্য ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব নেতার অতীতে ব্যবসায়িক ও সামাজিক কারণে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তোলা কিছু ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে যুবদলের নবগঠিত কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. ইনছান (ইনছান আলী) বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক। বগুড়া জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্র দলের আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি ছিলাম। দলের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। এখন কিছু ছবি ব্যবহার করে আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ওষুধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকায় বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি বগুড়ার বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উপস্থিত থাকতে হয়েছে। তৎকালীন কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট বগুড়ার সভাপতি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা৷ সেই সম্পর্কিত কিছু ছবি এখন বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
সহ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানা বলেন, আমার ওষুধের ব্যবসা রয়েছে ৷ আমাদের ওষুধের দোকান উদ্বোধনের সময় বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি বগুড়ার তৎকালীন সভাপতিও উপস্থিত ছিলেন, যিনি একজন আওয়ামী লীগ নেতা। এখন সেই ছবিকে ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
নবনির্বাচিত বগুড়া জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান বলেন, বগুড়া জেলা যুবদলের নবগঠিত কমিটি অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে। এখানে পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের স্থান দেওয়া হয়েছে। কিছু মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। আমি সবাইকে এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাই।
নবনির্বাচিত বগুড়া জেলা যুবদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তারা ছাত্রদল ও যুবদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাদের পরিবারও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। যারা পদ পাননি, তারাই এখন মিথ্যা অভিযোগ রটিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
নবগঠিত বগুড়া জেলা যুবদল কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে দলীয় নেতাকর্মীরা বিশ্বাস করেন, এসব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে বিএনপির আদর্শ বাস্তবায়নে নবগঠিত কমিটি সক্রিয়ভাবে কাজ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫
কেইউএ/জেএইচ