ঢাকা, রবিবার, ২ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

রংপুরে জামায়াতের ৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
রংপুরে জামায়াতের ৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা

রংপুর: দীর্ঘ ১৬ বছর সারা দেশের মতো রংপুরের রাজনীতির মাঠে কোণঠাসা ছিল জামায়াতে ইসলামী। নেতা-কর্মীরা মামলা-হয়রানির কারণে ছিলেন পলাতক।

কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী সরকারের পতন ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনার দেশত্যাগে ঘুরে দাড়িয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

রংপুরসহ সারা দেশে সভা-সমাবেশ ও সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। নিচ্ছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি।
এ ধারাবাহিকতায় সারা দেশের মতো রংপুরের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী।

প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত হওয়া প্রার্থীরা হলেন রংপুর-১ (গংগাচড়া ও সিটি করপোরেশনের আংশিক) আসনে মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক রায়হান সিরাজী, রংপুর-৩ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগর কমিটির সাবেক আমির অধ্যাপক মাহবুবার রহমান বেলাল, রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে রংপুর মহানগর জামায়াতের আমির উপাধ্যক্ষ এটিএম আজম খান, রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে রংপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম রব্বানী এবং রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরিনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মো. নুরুল আমিন।  

তবে জেলার গুরুত্বপূর্ণ আসন রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে এখন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি তারা। এই আসনের একসময়ের প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তার মুক্তির পর এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে দলটি -এমনটাই জানা গেছে।

এদিকে রংপুরের-৫ আসনে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী ঘোষণার মধ্য দিয়ে চাঙা হয়ে উঠেছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। গত ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর মুক্তভাবে নিশ্বাস নিচ্ছেন সবাই। ইতোমধ্যেই রংপুরে পাঁচটি জনসভায় বক্তব্য রেখেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমির ড. শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।  

প্রতিনিয়তই তারা গ্রাম পর্যায়ে উঠান বৈঠক, কমিটি গঠন, শিক্ষা শিবির, সভা-সমাবেশ করে নেতা-কর্মীদের চাঙা করছেন। প্রার্থী ঘোষণার পর দলটির নেতা-কর্মীরা আরও জোরেসোরে মাঠে নামবেন বলে দলীয় সূত্র জানায়।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী।  

তিনি বলেন, এটা দলের প্রাথমিক যাচাই-বাছাই ও মূল্যায়ন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে তখন কেন্দ্রীয় ভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। কালো টাকা এবং পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্ব দেখতে চায় দেশের মানুষ। এজন্য জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দল গোছানো এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কর্মপরিকল্পনা শুরু হয়েছে।

এদিকে মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের আমলে সারা দেশে কোণঠাসা অবস্থায় ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। বাতিল হয় দলটির নিবন্ধনও। সে সময় প্রকাশ্যে দলীয় কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি জামায়াত। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে অনেক নেতা-কর্মী হতাহত হয়েছেন। কেউ বরণ করেছেন পঙ্গুত্ব। মামলা-হামলা ও হয়রানিতে জর্জরিত ছিল দলটি।

কিন্তু গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন হলে মুক্ত বাতাসে রাজনীতিতে ফিরে দলটি। এরপর নেতা-কর্মীরা উঠান বৈঠক, কমিটি গঠন, সভা-সমাবেশ শুরু করেন। নেতা-কর্মীদের করে তুলেন চাঙা।

জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জানান, তারা (জামায়াত নেতাকর্মীরা) জনগণের কাছে জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ ও আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরছেন। সামনে নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনে জামায়াত অংশ নেবে। ইতোমধ্যেই প্রার্থীও ঘোষণা করে দলটি। তাই নেতা-কর্মীরা মাঠে আগাম কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।