লালমনিরহাট: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ভারতের কাছে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি পতিত স্বৈরাচার সরকার। যে কারণে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা এলাকা হতে যাচ্ছে মরুভূমি।
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনের ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ও জনতার সমাবেশ সমাপনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তারেক রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট ভারত যে স্বৈরাচার পালিয়ে গেছেন, সেই খুনি প্রায় বলতেন ‘ভারতকে যা দিয়েছি, তারা তা কোনোদিন ভুলতে পারবে না’। আজ ভারত শেখ হাসিনাকে ঠিকই ভুলে যায়নি। এতেই বোঝা যায়, ভারতের সম্পর্ক ছিল শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে নয়।
অন্তবর্তী সরকার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, দু-একজন উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একেক রকম বক্তব্য দিচ্ছেন, এ কারণে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন, ফ্যাসিবাদ আবার যেন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হয়। পাশাপাশি সরকার কোনো হটকারী সিদ্ধান্ত যেন নিতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক আইন মতে তিস্তার পানি আমাদের অধিকার। প্রতিবেশী দেশের অপ্রতিবেশী আচরণের কারণে আজ আমরা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আজ ৫০ বছর হলো ফারাক্কায় পানির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফলে তিস্তাসহ অনেক নদী এখন ধু ধু বালুচর। এতে প্রতি বছর যেমন তিন-চারবার বন্যা হয়, তেমনি লাখ কোটি টাকা ক্ষতি হয়।
তারেক রহমান আরও বলেন, ১৬ বছরে নদী কমিশনকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে প্রতিবেশী ভারতের স্বার্থে। আমরাও প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই। তবে সেই সম্পর্ক হবে দেশের স্বার্থে। ভারত যদি আমাদের পানির ন্যায্য অধিকার না দেয় তাহলে দেশের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করব এবং জাতিসংঘের কাছে যাব।
পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা পাড়ের ১১টি পয়েন্টে দুদিনব্যাপী জনতার সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ‘তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন।
এ সমাবেশগুলোতে লাখ লাখ মানুষ অংশ নেন। যার প্রধান সমন্বয়কারী বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবীব দুলু। দুদিনব্যাপী এ কর্মসূচির ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার মধ্য রাতে এ কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটবে।
১১টি পয়েন্টের বিভিন্ন স্থানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় পার্টি (জেপি), সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
** বাংলার মানুষ প্রতিবেশী দেশের কোনো অন্যায্যতা দেখতে চায় না: তারেক রহমান
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫
এসআরএস