ঢাকা, শনিবার, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ‘২৬ ফেব্রুয়ারি’, মতবিরোধের পর শীর্ষ পদ চূড়ান্ত

ফাহিম হোসেন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ‘২৬ ফেব্রুয়ারি’, মতবিরোধের পর শীর্ষ পদ চূড়ান্ত নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম

ঢাকা: দীর্ঘ কয়েকদিনের অস্থিরতার পর নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদে কারা থাকবেন, তা অনেকটাই চূড়ান্ত। দলের কাঠামো নাগরিক কমিটির মতোই থাকছে।

তবে সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন দুটি পদ ‘সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক’ ও ‘সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব’ পদ তৈরি করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে সংগঠনের আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে একটি প্রস্তুতি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ও শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সভা করেছে। প্রথম সভায় দলের আত্মপ্রকাশের সময়, অনুষ্ঠানের ধরন, শৃঙ্খলা, উপস্থিতিসহ নানা বিষয় আলোচনা হয়েছে। আয়োজনের শৃঙ্খলার জন্য কমিটি গঠন এবং দলের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র প্রণয়নের জন্য প্রস্তুতি কমিটি করা হয়েছে।

সমঝোতার ভিত্তিতেই দলের শীর্ষ পদের নেতারা নির্বাচিত হবেন বলে নাগরিক কমিটির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন।

তারা জানিয়েছেন, দলের আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলামকে নিয়ে তেমন কারও আপত্তি ছিল না। তিনি যেকোনো সময় অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করে নতুন দলের দায়িত্ব নেবেন। সদস্য সচিব পদ নিয়ে দীর্ঘ সময় মতবিরোধ ছিল। শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন অনেকেই শিবিরের সাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও বর্তমানে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদকে এ পদে চাইছিলেন। তবে আলাপ-আলোচনার পর এই পদে নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের আসাটা অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছে।

এছাড়াও দলের মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র পদে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে দেখা যেতে পারে বলে এই নেতারা জানিয়েছেন। অন্যদিকে সমঝোতার ভিত্তিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আলী আহসান জুনায়েদ ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব পদে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী আসতে পারেন বলে জানা গেছে।

নতুন দল ২৬ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করতে পারে। শুরুর দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আত্মপ্রকাশের কথা থাকলেও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দলটি আত্মপ্রকাশ করতে পারে। দলটির আয়োজনে নানা কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তবে দলের নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

এর আগে গত কয়েক সপ্তাহে নাগরিক কমিটির শীর্ষ পদে কারা আসবেন, তা নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন ভাবধারার রাজনীতি করা তরুণরা রয়েছেন। এরমধ্যে একটি অংশ সাবেক ছাত্রশিবিরের নেতা রয়েছেন। এছাড়াও বাম ঘরানার ও মধ্যমপন্থি রাজনীতি করা তরুণরাও রয়েছেন। ছাত্রশিবিরের তরুণরা নতুন দলের শীর্ষ পদে নিজেদের পছন্দের নেতা বসাতে চাইছিলেন।

বিষয়টি শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আসে। এসময় শিবিরের নেতা আরেফীন মোহাম্মদ, রাফে সালমান রিফাত গণঅভ্যুত্থানে নিজেদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।

তবে নাগরিক কমিটির শীর্ষ এক নেতা বাংলানিউজকে  বলেছেন, নতুন দল গঠনের আগে এ ধরনের মতবিরোধকে তারা স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে তার সমাধানও হয়েছে। তবে কেবল অভ্যুত্থানের অবদান নয়, বরং রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা ও নাগরিক কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।

দল গঠনের বিষয়ে নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ জনমত জরিপ যে কর্মসূচি শুরু করেছি। সেখানে আমাদের কাছে লক্ষাধিক উপাত্ত এসেছিল। আমরা সেগুলো নিজেদের মধ্যে পর্যালোচনা করেছি। পার্টি তৈরির জন্য ইতোমধ্যে নানা ধরনের প্রস্তুতিমূলক কমিটি হয়েছে। সামনের সপ্তাহের শেষদিকে আমরা আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করতে পারব বলে আশা রাখি।

গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দলের প্রস্তুতির বিষয়ের সভা সম্পর্কে তিনি বলেন,  সভায় আত্মপ্রকাশের সময়, আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের ধরন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শৃঙ্খলা, গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র প্রণয়নসহ বিভিন্ন কমিটি করা হয়েছে।

তবে নেতৃত্ব এখনো পুরোপুরি চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন আখতার। তিনি বলেন, সংগঠনের নেতৃত্ব এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা চলমান আছে। গ্রহণযোগ্যতা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং আমাদের রাজনৈতিক লক্ষ উদ্দেশ্য ও ভীষণ-মিশনে একাত্মবোধের জায়গাগুলো বিবেচনা নিয়ে আমরা বোঝাপড়ার মধ্য দিয়েই নেতৃত্ব নির্বাচন করব।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
এফএইচ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।