ঢাকা: সৌদি আরবের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যেও আজ রোববার (৩০ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে। বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রায় এক দশক পর লন্ডনে তার বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় ঈদ উদযাপন করছেন।
রোববার (৩০ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, উনি (খালেদা জিয়া) লন্ডনে বেটার আছেন। আজ সেখানে ঈদ উদযাপন হচ্ছে। ফ্যামিলির সঙ্গে প্রায় দশ বছর পরে উনি উদযাপন করছেন। দিস ইজ আ গুড থিংক ফর আস। ’
লন্ডনে থাকা খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ম্যাডাম ওনার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের বাসায় আছেন। ঈদের দিনটি উনি বাসায় আপনজনদের নিয়ে একান্তে কাটাচ্ছেন। বাসায় দুই পুত্রবধূ (ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান) আছেন… আছেন তিন নাতনি (ব্যারিস্টার জায়মা রহমান, জাফিয়া রহমান, জাহিয়া রহমান)। ম্যাডামকে ঘিরে ঈদের সব আয়োজন তারাই সাজিয়েছেন। কারণ দীর্ঘ বছর পর ম্যাডাম তার আপনজনদের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছেন। বুঝতেই পারছেন এখানে অনেক আবেগ জড়িত। ’
এর আগে ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমানের বাসায় ঈদুল আজহা উদযাপন করেছিলেন খালেদা জিয়া। তারও আগে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছিলেন তিনি।
খালেদা জিয়া কেমন আছেন জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘তিনি এই মুহূর্তে আগের চেয়ে অনেকটা ভালো আছেন। আগের চাইতে তিনি বলতে পারেন আলহামদুলিল্লাহ উনি মাচ বেটার। ’
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলেও জানান জাহিদ হোসেন।
গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পৌঁছান। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’ এ ভর্তি করা হয়। ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন এই হাসপাতালে অধ্যাপক জন কেনেডির তত্ত্বাবধানে। এরপর লন্ডন ক্লিনিকে তার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় অধ্যাপক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকছেন খালেদা জিয়া।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।
কথিত দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালে বিএনপির চেয়ারপারসনকে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি করে তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকার। করোনার সময়কালে সরকার তাকে বিশেষ কারামুক্তি দেয়। কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদে কেটেছে কারাগারে ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার পরিবার বারবার আবেদন করলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন খালেদা জিয়া। এরপর তার বিদেশ যাওয়ার দরজা উন্মুক্ত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৫
এইচএ