ঢাকা, বুধবার, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রায়পুরে সংঘর্ষে আহত স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মীর মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৫
রায়পুরে সংঘর্ষে আহত স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মীর মৃত্যু নিহত জসিম উদ্দিন বেপারী

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত জসিম উদ্দিন বেপারী মারা গেছেন।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে নিহতের ছোট ভাই কাউছার হোসেন এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

এদিন বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর প্রাইম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জসিম। গত ৭ এপ্রিল সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন তিনি। ওইদিন সাইজ উদ্দিন নামে আরেক বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হলো।

নিহত জসিম রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড চরবংশী গ্রামের হজল করিমের ছেলে ও পেশায় ঢালাই শ্রমিক ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী ও রায়পুর উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের অনুসারী ছিলেন। আর ঘটনার দিন নিহত হওয়া সাইজ উদ্দিন কৃষকদল নেতা জিএম শামীমের অনুসারী ছিলেন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ দুজন দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষে জড়ান।

নিহত জসিমের ছোট ভাই কাউছার হোসেন বলেন, ৭ এপ্রিল কৃষকদল নেতা জিএম শামীম ও মোস্তফা গাজীর লোকজন আমার ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। পরে তাকে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে গিয়ে আমার ভাই পরাজিত হয়েছে। তিনি মারা গেছেন। তার মরদেহ বাড়িতে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) জামিলুল হক বলেন, জসিম নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার মৃতদেহ নিয়ে এলে ময়নাতদন্ত করা হবে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে উপজেলা কৃষকদলের সদস্যসচিব জিএম শামীম ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর জের ধরে দুই দফায় শামীম ও ফারুকের নেতাকর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে ওই ইউনিয়ন বিএনসিহ সকল অঙ্গসংগঠনের কার্যক্রম বিলুপ্ত করা হয়। ৭ এপ্রিল আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বেড়িবাঁধ ও বাবুরহাট এলাকায় কৃষকদল নেতা শামীম গাজী ও ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচতি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক গাজীর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

ঘটনার সময় বিল্লাল মাঝি, আবু তাহের মাঝি, জিহাদ হোসাইনের বসতবাড়িতে শামীমের অনুসারীরা ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। এর জের ধরেই ৮ এপ্রিল ফের হামলা চালিয়ে শামীম গাজীর অনুসারীরা ফারুক কবিরাজের লোকজনের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেন। দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার দিন বিএনপি কর্মী ও স্পেন প্রবাসী সাইজ উদ্দিন দেওয়ান ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা যান। গত ৯ এপ্রিল তার বড় ভাই হানিফ দেওয়ান বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১৬০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।

১৩ এপ্রিল র‍্যাব-১১ চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জলিল দর্জিকে গ্রেপ্তার করে রায়পুর থানায় হস্তান্তর করে। সংঘর্ষের ঘটনার পর বিএনপি ও এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের ১৬ নেতাকর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে উপজেলা বিএনপি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৫
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।