ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৫ জুন ২০২৫, ০৮ জিলহজ ১৪৪৬

রাজনীতি

নিরপেক্ষ পরিবেশে যেকোনো সময় নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত জামায়াত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৫৪, জুন ৩, ২০২৫
নিরপেক্ষ পরিবেশে যেকোনো সময় নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত জামায়াত জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান

ঢাকা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে জামায়াত যেকোনো সময় ভোটে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বর বা জুন যেকোনো সময় হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে সময় দিতে চাই। আমরা তাদের পারফরম্যান্স আরও দেখতে চাই। তারা কর্ম দিয়েই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ইউনিয়ন কমিশনার ছাড়া আর কোনো পর্যায়ে কার্যক্রম নেই। এর কারণে জনগণ কষ্টে আছে। তাই স্থানীয় নির্বাচন আগে হওয়া দরকার বলে মনে করি। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন তার সক্ষমতা দেখাতে পারবে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

সংস্কার আন্তরিকতার সঙ্গে না করলে সেটি স্থায়ী হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেসিক কয়েকটি সংস্কার হতে হবে তারপর নির্বাচন।

তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন আয়োজনের জন্য ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ থেকে জুনের ২৬ তারিখ পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করেছেন। আমরা মনে করি, নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্ভব হলে রোজার আগেই হওয়া উচিত। কোনো কারণে দেরি হলে, এপ্রিলের মধ্যে শেষ করা উচিত। কারণ মে মাস থেকে দেশের আবহাওয়া অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।

জামায়াতের আমীর বলেন, আমরা সময় নির্ধারণের ক্ষমতা রাখি না, তবে আমাদের মতামত দিতে পারি। সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব সরকারের।

বিএনপির পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জোর দাবি জানানো হচ্ছে। ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে জামায়াত প্রস্তুত কী না। ওই প্রশ্নের উত্তরে শফিকুর রহমান বলেন, ডিসেম্বর কেন, আজকেও যদি দেখি যে সমতল মাঠ তৈরি হয়ে গেছে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে জাতি প্রস্তুত, সব অঙ্গ প্রস্তুত, তাহলে তো আমরাও নির্বাচনে যাবো। আমাদের নির্বাচন যেতে কোনো সমস্যা নেই। এ বিষয়গুলো পরিস্কার না করে, ডিসেম্বর কিংবা এপ্রিল বলে কোনো লাভ হবে না।

যারা নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া ও এর সরঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অধিকার অন্যায্য ভাবে যারা ব্যবস্থা নিয়েছে তাদের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার এখনো পরিকল্পনা নিচ্ছি না। এ বিষয়ে আমরা চিন্তা করবো।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনই কোনো আশা বা হতাশার কথা বলতে চাই না। আমরা তাদের পারফরম্যান্স আরও পর্যবেক্ষণ করতে চাই।

দলের নিবন্ধন বাতিলের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এখনো তাদের নিয়ে চিন্তা করিনি, তবে ভবিষ্যতে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রাখব।

ফ্যাসিজম প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জীবন বাজি রেখে যারা লড়েছেন, তাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিজমের অবসান। ফ্যাসিস্টরা বিদায় নিলেও ফ্যাসিজমের ছায়া এখনো জাতির ওপর রয়ে গেছে।

জামায়াত আমির বলেন, জীবনবাজি রেখে যারা পরিবর্তনের জন্য লড়াই করেছিলেন, তাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিজমকে বিদায় করা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ফ্যাসিস্টরা বিদায় নিয়েছে, কিন্তু ফ্যাসিজম রয়ে গেছে। এর কালো ছায়া এখনো জাতির ঘাড়ে রয়ে গেছে। ফ্যাসিজমকে পুরোপুরি বিদায়ের লক্ষে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দরকার। যার মধ্য দিয়ে একটা ন্যায্য সরকার গঠিত হবে। যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

টিএ/আরএ/জেএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।