ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ জুন ২০২৫, ১৯ জিলহজ ১৪৪৬

রাজনীতি

দেশজুড়ে ভোটের হাওয়া

নিউজ ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:০২, জুন ১৫, ২০২৫
দেশজুড়ে ভোটের হাওয়া ছবি: প্রতীকী

দেশজুড়ে এখন প্রধান আলোচনার বিষয় নির্বাচন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথামার্ধেই হতে যাচ্ছে—এমন খবরে জনমনে এক ধরনের স্বস্তি দেশের সর্বত্র।

সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ বাড়িয়েছেন। শোভাযাত্রাও হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তৎপর অনেকে। কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতারা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ভিন্ন কথা বললেও তাদের স্থানীয় নেতারা নির্বাচনী প্রচারে পিছিয়ে নেই। দল থেকে, বিশেষ করে বিএনপি থেকে কারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন তা নিয়েও কৌতূহলের অন্ত নেই। ছোট দলগুলো বড় কোনো দলের সঙ্গে জোট গঠনের অপেক্ষায়।

গত শুক্রবার লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের সময় নিয়ে এক ধরনের সমঝোতার পর দেশজুড়ে নির্বাচনী তৎপরতা জোরদার হয়েছে বলে জানা গেছে।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি সুষুম নির্বাচন দেশবাসীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা। ভোট দিয়ে নিজেদের পছন্দের সরকার গঠনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে দেশবাসী। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনের কোনো সমস্যা হবে না।

সুষম নির্বাচন করাটাই এখন অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশনকে ওই সময়ে নির্বাচন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য দ্রুত একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করতে হবে। বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় এসে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন করার বিষয়টিতে সব রাজনৈতিক দল একমত হবে—এমন আশা করাও ঠিক নয়। বেশির ভাগ দলের সম্মতিটাই গ্রহণযোগ্য। দলগুলোর সবাই নির্বাচন চায়।

তবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল এবং নতুন একটি দল মনে করে, বেশি সময় পেলে তারা তাদের দল গুছিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু তারা যে দল গুছিয়ে নিতে পারবে সে সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। আবার কারো মতে, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠকে সমঝোতার বিষয়টিতে বেশির ভাগ দল সমর্থন জানিয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারির প্রথামার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অন্য দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা দরকার।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি গতকাল শনিবার এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার একসময় আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা বলেছিল। পরে প্রধান উাপদেষ্টা ঘোষণা দিলেন, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। সব শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে বৈঠক করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। অর্থাৎ আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথামার্ধে নির্বাচন হতে পারে। আমার মনে হয়, এ সময়ে নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনের কোনো সমস্যা হবে না। এখন নির্বাচন কমিশনকে ওই সময়ে নির্বাচন করতে প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করতে হবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার জন্য এখনো প্রায় ছয় মাস সময় রয়েছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নির্বাচন হলে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে তফসিল ঘোষণা হবে। কিন্তু তার আগে জাতীয় সংসদের আসনগুলোর সীমানা নির্ধারণ, দল নিবন্ধন, আরপিও সংস্কার করতে হলে সে বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি, পর্যবেক্ষক নীতিমালা, অন্যান্য নির্বাচনী বিধি-বিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার এগুলো করতে হবে, করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। কিছু কাজ নির্বাচন কমিশন আগেই শুরু করেছে বলে আমরা জানি। ভোটার তালিকা প্রস্তুত প্রায় সম্পন্ন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও নির্বাচন কমিশনের বৈঠক হওয়া দরকার। ’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার ধারণা, সব দল এখন নির্বাচনমুখী। কয়েকটি দল তাদের প্রার্থীও চূড়ান্ত করে রেখেছে। মাঠ পর্যায়ে সব দলই, বিশেষ করে জুলাই-গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের দলগুলো জনসংযোগ শুরু করে দিয়েছে। এ অবস্থায় সঠিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাটাই অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ। দু-এক মাস আগে-পিছে কিছু আসে যায় না। নির্বাচনটা কেমন হলো সেটাই আসল বিষয়। কারণ একটা নির্বাচনের রেশ অনেক দিন থাকে। ’

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয়-সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। দেশ দ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরতে চলেছে। সারা দেশে নির্বাচন নিয়েই আলোচনা। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠকে সমঝোতার বিষয়টি বেশির ভাগ দল সমর্থন জানিয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারির প্রথামার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অন্য দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা দরকার। এ বিষয়ে আমরা এরই মধ্যে জামায়াত, এনসিপিসহ কয়েকটি দলের প্রতিক্রিয়ার কথা জেনেছি। তারা কিছুটা নাখোশ। তাদের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের হাতে সময়ও বেশি নেই। জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার পর সেই সনদের আলোকে চার-পাঁচ মাসের মধ্যে নির্বাচনী বিধি-বিধানেরও কিছুটা সংস্কার প্রয়োজন হবে। নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশের জন্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও আরো উন্নতি ঘটাতে হবে। সব পক্ষের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার মাধ্যমে এটি করা অসম্ভব কিছু নয়। ’

সাবেক সচিব ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আবু আলম শহীদ খান মনে করেন, নির্বাচন এ দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা। গত তিনটি নির্বাচনে সে আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও জনগণের ভোট হাইজ্যাক করা হয়। ভোট হয়েছে রাতের অন্ধকারে ভোটকেন্দ্র দখল করে। বিনা ভোটে নির্বাচনের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের মানুষের অপেক্ষা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের। অন্তর্বর্তী সরকার একসময় আগামী ডিসেম্বর থেকে জুন, আবার আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধে এবং সব শেষে সম্ভাব্য সময় আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগের সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারে বলে জানিয়েছে। কিন্তু এটিও এখন ততটা পরিষ্কার নয়। শর্তসাপেক্ষে হতে পারার মধ্যেই রয়েছে। লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যার তারেক রহমানের সঙ্গে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সমঝোতা বেশির ভাগ দলের কাছে স্বস্তির মনে হলেও জামায়াত ও এনসিপি ভিন্ন কথা বলছে। ড. ইউনূস দেশে ফিরেছেন, তিনি হয়তো উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্তের জন্যও হয়তো আমাদের অপেক্ষা করতে হতে পারে। নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা ও অনিশ্চিয়তা কেটে গেছে—এটা বলার মতো পরিস্থিতি এখনো হয়নি বলে আমার মনে হয়। দলগুলো সবাই নির্বাচন চায়। তবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল এবং নতুন একটি দল মনে করে, বেশি সময় পেলে তারা তাদের দলকে গুছিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু তারা যে দল গুছিয়ে নিতে পারবে সে সম্ভাবনাও দেখছি না। ৫ আগস্টের আগে এই দলের নেতাদের প্রতি যে ধরনের জনসমর্থন ছিল, পরে তা আর দেখা যাচ্ছে না। এই দলটিকে তাদের সভা-সমাবেশ সফল করার জন্য এখন জামায়াত ও কয়েকটি ইসলামী দলের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এরা নির্বাচনের জন্য সময় চায়। কিন্তু কতটা সময় চায় তা-ও পরিষ্কার না। এ ছাড়া যে কয়েকটি দল মনে করছে বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন করলে তাদের তেমন সুবিধা হবে না, তারাও দ্রুত নির্বাচনের লক্ষ্যে যেকোনো সমঝোতার বিপক্ষে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন যারা চাচ্ছে তারাও আসলে সময়ক্ষেপণের পক্ষে। ’

সারা দেশে নির্বাচনী তৎপরতা : কালের কণ্ঠের স্থানীয় প্রতিনিধি ও নিজস্ব প্রতিবেদকদের পাঠানো সংবাদ অনুযায়ী, সারা দেশেই নির্বাচনী তৎপরতা শুরু হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনেই বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের প্রার্থীদের মধ্যে লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা প্রকট। তবে নতুন রাজনৈতিক দল এনএসপি ধীরে ধীরে তাদের কার্যক্রম নিয়ে মাঠে এগোচ্ছে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাদের ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, সব কটি আসনের সম্ভাব্য হেভিওয়েট প্রার্থীরা জোরালোভাবে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। এ ছাড়া সাংগঠনিকভাবেও ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়, যেখানে সম্ভাব্য প্রার্থীকে উপস্থিত রাখা হয়।

বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনে বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা এই মুহূর্তে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নেই। বিএনপির পক্ষ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনে কর্মী সমাবেশ, সভা-মিছিল এবং মোটরসাইকেল শোডাউনের মাধ্যমে জনসমর্থন লাভের চেষ্টা করছেন। একইভাবে জামায়াতে ইসলামের প্রার্থীরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সভা-সমাবেশ ও মোটরসাইকেল শোডাউনের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসন থেকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী তমিজ উদ্দিন ও ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করছেন। এ ছাড়া জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ এবং ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নাজমুল হাসান অভিও সীমিত পরিসরে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা জেলা উত্তরের আমির আব্দুর রউফ এবং খেলাফত মজলিসের ঢাকা জেলা সভাপতি মুফতি আশরাফ আলী সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পোস্টার সাঁটিয়েছেন। তাঁরাও গণসংযোগে ব্যস্ত। অন্যান্য দলের তেমন কার্যক্রম নেই।

বরিশালে মাঠে নেমে পড়েছেন আগ্রহী প্রার্থীরা। তাঁরা ঈদুল আজহার ছুটিতে এলাকায় প্রাথমিক গণসংযোগ সেরে নিয়েছেন। বিশেষ করে বিএনপির নেতাদের পক্ষ থেকে ভূরিভোজ, মহড়া ছিল চোখে পড়ার মতো।

গতকাল গাজীপুর-২ আসনে নির্বাচনী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার শুরুতে টঙ্গীতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক মোহা. জামাল উদ্দীন বলেন, বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন করতে হলে তাকওয়াবান, সৎ ও দেশপ্রেমিক মানবিক মানুষকে ক্ষমতায় পাঠাতে হবে। এই জন্য গাজীপুরের প্রতিটি বাড়ি, অলিগলি, ডোর টু ডোর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর পক্ষে জোরদার প্রচার চালিয়ে যেতে হবে।

এদিকে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা হলেও কোনো নির্বাচনী তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি মেহেরপুরের রাজনীতিতে। বর্তমানে মেহেরপুরে বিএনপি সবচেয়ে বড় দল। ৫ আগস্টের পর মেহেরপুর জেলা বিএনপির নতুন আহবায়ক কমিটি দেওয়ায় দলটিতে গ্রুপিংয়ের রাজনীতি শুরু হয়েছে। তবে অনেক আগেই মেহেরপুরের দুটি আসনেই জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমন্বয় কমিটিও অনুমোদন করেছে কেন্দ্র।

লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ও জামায়াত প্রার্থী রেজাউল করিম দুজনেই প্রত্যন্ত অঞ্চলে সভা, সমাবেশ করছেন। সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও তাঁদের সরব উপস্থিতি নজর কাড়ে।

লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনে বিএনপির সহশিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উপদেষ্টা খালেদ সাইফুল্লাহ ও জামায়াত প্রার্থী এ আর হাফিজ উল্যা ভোটের মাঠে রয়েছেন। এর মধ্যে আশরাফ উদ্দিন ও খালেদ সাইফুল্লাহ এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। আ স ম আবদুর রব অসুস্থ থাকায় স্ত্রী তানিয়া রব দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিয়ে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখছেন।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে—এই সংবাদে ঝিনাইদহে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি দেখা গেছে। তারা বলছে, নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল সরকার গঠন করলে দেশের জনগণ উপকৃত হবে। একই সঙ্গে দেশের চলমান সংকটের নিরসন ঘটবে। আর রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাই প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া সময় অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে।

ঝিনাইদহ শহরের হামদহ এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘১০ মাস ধরে দেশে কোনো রাজনৈতিক সরকার নেই। ফলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে এবং নানা অপরাধ বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার গঠনের কোনো বিকল্প নেই। লন্ডনে তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে নির্বাচনের জন্য যে সময়ের কথা বলা হয়েছে তাতে আমরা খুশি। ’

জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আলী আজম মো. আবু বকর বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দেশে কিছু সংস্কার প্রয়োজন। আমরা আশা করছি, নির্বাচনের জন্য ঘোষিত সময়ের আগে ওই সব সংস্কার শেষ করবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। ’

জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ বলেন, ‘গত ১৭ বছর দেশে গণতন্ত্র নেই। আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য এই দীর্ঘ সময় লড়াই-সংগ্রাম করেছি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে বলে আশা করছি। ’

সূত্র: কালের কণ্ঠ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।