ঢাকা: আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই দেশে একটি জাতীয় নির্বাচনের দিকে সবাই এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণফোরামের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আমরা একসঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করেছি। এই ধারা অব্যাহত রাখছি এবং এটি আগামী নির্বাচন পর্যন্ত থাকবে। আগামী নির্বাচন ও পরবর্তী সরকার গঠনসহ ভবিষ্যতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেব। আমাদের ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব সবাই মিলে বাস্তবায়ন করব, যা একটি জাতীয় সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে।
তিনি আরও বলেন, লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক জনগণ অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। যে আশঙ্কা ছিল, তা কেটে গেছে। জাতি এখন নির্বাচনের টানেলে প্রবেশ করেছে। আমরা সবাই নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
নির্বাচনের তারিখ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের তারিখ, মনোনয়ন দাখিলের তারিখ, বাছাইয়ের তারিখ, নির্বাচনের দিনক্ষণ, এসবের একটি সময়সূচি দেওয়া হয়। এটি নির্বাচনের এত আগে কখনো দেওয়া হয়নি। নির্বাচনের কাছাকাছি সময়েই এটি দেওয়া হয়। সব নির্বাচনেই একই অবস্থা। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। নিশ্চিতভাবেই ফেব্রুয়ারির প্রথম অর্ধে নির্বাচনের দিকে আমরা সবাই এগিয়ে যাচ্ছি।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছর একটি স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার উৎখাত হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার একটি বিরল সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এরপরেও দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্রের কারণে নির্বাচন নিয়ে একটি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। লন্ডনের একটি স্মরণীয় বৈঠকের মাধ্যমে সেই অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। দেশের সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, বর্তমানে যে সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে, সেখানে বিএনপি, আমরাসহ সক্রিয় সকল দল ভূমিকা রাখছি। বিভিন্ন বিষয়ে সেখানে আলোচনা হচ্ছে এবং সকল দল দলীয়ভাবে মতামত দিচ্ছে। আমরা ঐকমত্য কমিশনকে জানিয়েছি, যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হচ্ছে, সেগুলো অনতিবিলম্বে আগামী সংসদে পাশ করার জন্য জাতীয় প্রস্তাব হিসেবে রাখা হোক এবং এই ব্যাপারে যেন কোনো কালক্ষেপণ না হয়। এ পর্যন্ত যত আলোচনা হয়েছে, সেখানে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ ব্যতীত আর কোনো বিষয়ে একমত হতে পারিনি। জাতির প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য এই সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে ধাবিত হতে হবে।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে দলটির ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- সভাপতি পরিষদ সদস্য এ.কে.এম. জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, মো. সেলিম আকবর, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম, কোষাধ্যক্ষ শাহ নুরুজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, লতিফুল বারী হামিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সানজিদ রহমান শুভ।
ইএসএস/এমজে