২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশ্রয় নেন ভারতে।
গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো আরও যারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশের সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতও রয়েছেন। গত এক বছরে তিনি নিজের নতুন কিংবা পুরোনো কোনো শখের পেছনে ছোটার সময় পাননি।
দলের কাজে তিনি ব্যস্ত। তার মূল লক্ষ্য হলো শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানো। এটি তিনি করতে চান অধ্যাপক মুহাম্মদের ইউনূসের সরকারকে সরিয়ে। তার দাবি এই সরকার ‘অবৈধ’।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী দ্য প্রিন্টকে ফোনে বলেন, হাসিনা চলে যাওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ এক অতল গহ্বরের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। আমার এখন একটাই লক্ষ্য—বাংলাদেশকে আবার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা। আমার কোনো শখ নেই, খেলাধুলার সময় নেই, এমনকি অন্য কোনো বিনোদনেও নিজেকে জড়ানোর সুযোগ নেই।
তার কাছে কাজ মানে হলো বাংলাদেশে রাজনৈতিক কর্মসূচির পরিকল্পনা করা এবং নির্বাসনে থাকা আওয়ামী লীগের কর্মী ও শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ রক্ষা করা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য জানান, শুধু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই নন, আরও অনেকে নির্বাসনে আছেন। তার কথায় নাগরিক সমাজের অধিকারকর্মী, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা ও কূটনীতিকেরাও যোগ দিয়েছেন।
এই নেতার দাবি, ‘মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের প্রতিহিংসামূলক’ অভিযানের কারণে তারা বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, এই সংখ্যাটা যদি গুনতে যান, তা দুই হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
ভারতে যারা আছেন, তারা বেশিরভাগই কলকাতার উপকণ্ঠে পরিকল্পিত উপশহর নিউ টাউনে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রশস্ত রাস্তা, সহজে ভাড়া পাওয়া যায় এমন সাশ্রয়ী অ্যাপার্টমেন্ট, শপিং মল, ফিটনেস সেন্টার এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিকটবর্তী অবস্থান নিউ টাউনকে তাদের জন্য আদর্শ আবাসস্থলে পরিণত করেছে।
বাংলাদেশে ফেলে আসা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এই নির্বাসিতদের দিনযাপন এখন প্রায় রুটিনমাফিক হয়ে গেছে—ফজরের নামাজ আদায়, জিমে অনুশীলন বা ভোরের হাঁটা, সন্ধ্যা নামলেই দেশের ভেতর ও প্রবাসে ছড়িয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠক, আর হৃদয়ের গভীরে লালিত একটাই আশা—শিগগিরই ফিরে যাওয়া।
আরএইচ