ঢাকা: বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা নয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে তা বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২০১৯ সালে হবে।
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে সুযোগ নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর আগে মধ্যবর্তী নির্বাচন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কোনো আলোচনা নয়। আলোচনা হতে পারে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার। তবে সেই আলোচনায় যুদ্ধাপরাধী কিংবা জঙ্গিবাদী দলগুলোর সঙ্গে নয়।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। সেজন্য তারা (বিএনপি) ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করতে চায়। তাদের প্রতিহত করতে হবে।
৫ জানুয়ারি বিএনপির কর্মসূচি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, সভা-সমাবেশ করার অধিকার সবার আছে। সে ব্যাপারে আমরা কিছু বললো না। তবে কর্মসূচির নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে জঙ্গি তৎপরতা চালালে অবশ্যই সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
রাজনৈতিক দল হিসাবে এ অবস্থায় জনগণের পাশে থাকা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব বলেও জানান তিনি।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বলবো, নতুন বছরে আপনি ভয়ানক ‘ডাইনি’ রূপে আবির্ভূত হবেন না। বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে সরকার তার দায়িত্ব পালন করবে।
খালেদার বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বক্তব্য ভুল তথ্য ও মিথ্যাচারে ভরপুর। মিথ্যাচার করা তাদের রাজনৈতিক চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন তার (খালেদা) চোখে পড়ছে না অথবা জেনেও তিনি ভুল তথ্য তুলে ধরছেন।
সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের কথা তুলে ধরে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলারের মতো। বর্তমান সরকারের আমলে তা ১২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ওই সময় ৪১.৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করতো। বর্তমানে কমে তা ২৪ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ বিলিয়ন ডলারে। অথচ বিএনপির সময় তা ৬ বিলিয়ন ডলারের কম ছিল।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বন্ধ করতে তারা (বিএনপি-জামায়াত জোট) হত্যা অগ্নি সংযোগ ও মানুষ খুন করেছে। কিন্তু নির্বাচন বানচাল হয়নি। ৫ জানুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল বলেই দেশে গণতন্ত্র সমুন্নত আছে। আবারও বিশৃঙ্খলার অপচেষণ্টা শুরু কতরেচে।
স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী জঙ্গি জামায়াতকে নিয়ে ২০ দলীয় জোট করে সে অপচেষ্টা আবার শুরু হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারেকের বক্তব্যকে খালেদা জিয়া সমর্থন করে তিনি প্রমাণ করেছন তারককে সুশিক্ষা দিতে পারেন নি। তবে তারেক রহমান ও খালেদার বক্তব্যে ইতিহাস বিকৃত হবে না। জনগণ ইতিহাস জানে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ফরিদুন নাহার লাইলী, হাবিবুর রহমান সিরাজ, একেএম এনামুল হক শামীম, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪