ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা হয় হাওয়া ভবনে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৫
‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা হয় হাওয়া ভবনে’

ঢাকা: ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা হয় হাওয়া ভবনে। এ হামলায় জড়িত ছিলেন তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, আব্দুস সালাম পিন্টু, কায়কোবাদসহ অপরাপর আসামিরা।

আর এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা’।

সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ ট্রাইব্যুনালে এ সাক্ষ্য প্রদান করেন।
পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে তিনি এ সাক্ষ্য প্রদান করেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করেন।

এ নিয়ে মামলাটিতে ২০১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমানের সহকারী আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল জানান, মঙ্গলবার আদালতে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমানের মরদেহের সুরতহালকারী সাক্ষী জাকারিয়া সিরাজ চৌধুরী সাক্ষ্য দেবেন।

কাজী জাফর উল্লাহ সাক্ষ্যে বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জনসভায় ট্রাকে করা মঞ্চে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে তিনিও ছিলেন। গ্রেনেড হামলার ঘটনার পর গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে তিনিও মারাত্মকভাবে আহত হন। এরপর প্রথমে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে রাজধানীর শমরিতা হাসপাতাল এবং শেষে সিঙ্গপুরে গিয়ে চিকিৎসা করান। তার শরীরে এখানো কিছু স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। |

তিনি আরও বলেন, এ হামলার পরিকল্পনা হয় আব্দুস সালাম পিন্টুর সরকারি বাসভবন ও হাওয়া ভবনে। তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, আব্দুস সালাম পিন্টু কায়কোবাদসহ অন্যান্য আসামিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন।

হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা।

এ মামলার জামিনে থাকা আসামিরা হলেন, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম। তারা আদালতে হাজির ছিলেন।

অন্যদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ২৪ জন কারাগারে আছেন। এ মামলার অন্যতম আসামি গত ২১ নভেম্বর রাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক মন্ত্রী জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়।
 
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জন আসামি পলাতক আছেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় সন্ত্রাসীরা ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালায়। হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নির্মমভাবে নিহত হন।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী।

এ ঘটনায় মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় পৃথক তিনটি এজাহার দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৫
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।