ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ইউপিতে জোটগত নির্বাচন চায় ১৪ দলের শরিকরা

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৬
ইউপিতে জোটগত নির্বাচন চায় ১৪ দলের শরিকরা

ঢাকা: আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন জোটগতভাবে করতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪দলের শরিক দলগুলো। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জোটগতভাবে করতে আওয়ামী লীগ আগ্রহী নয় বলে জোটের শরিক দলগুলোর একাধিক নেতা জানিয়েছেন।



আর এ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ গ্রহণ করতে আওয়ামী লীগের অনাগ্রহের কারণে মনক্ষুন্ন ১৪দলীয় জোটের শরিকরা। বিষয়টি নিয়ে কোনো কোনো দলের মধ্যে হতাশাও রয়েছে।
 
আগামী মার্চ মাসের শেষ দিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৬০০টির মতো ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে বাকী ইউনিয়নগুলোতেও নির্বাচন হবে। এ সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে নির্বাচনের সময় এগিয়ে এলেও বিষয়টি নিয়ে ১৪দলে এখন পর্যন্ত কোনো আলোচনা হয়নি বলে জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কোনো সম্ভাবনাও দেখছেন না তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ১৪দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বেসরকারি বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মনে করি জোটগতভাবে নির্বাচন হলে ভাল হয়। কিন্তু সেটা আওয়ামী লীগের চাওয়ার উপর নির্ভর করে। জোটগতভাবে নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা দেখি না। এ বিষয়ে কোনো জোটে কোনো আলোচনা হয়নি। আওয়ামী লীগ না চাইলে তো আর এটা করা সম্ভব না।
 
এদিকে ১৪দলের শরিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের কারণে স্থানীয় সরকারে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনেও ১৪দল শরিকরা জোটগত নির্বাচনের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাতে সাড়া দেয়নি বলে এ দলগুলোর নেতাদের অভিযোগ।

শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময় স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে, সেসব নির্বাচনের বিষয় নিয়ে জোটে কখনও কোনো আলোচনাও হয়নি বলে তারা অভিযোগ করেন।

ওই নেতারা জানান, এক সঙ্গে আন্দোলন ও নির্বাচন এই বিষয়ে এক মত হয়েই ১৪দলীয় জোট গড়ে ওঠে। কিন্তু পরবর্তিতে জাতীয় নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো নির্বাচনে তার বাস্তব রূপ পায়নি।

১৪দলের নেতাদের মতে, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদকে প্রতিহত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দুর্নীতিমুক্ত অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার যে লক্ষ্য নিয়ে ১৪দল গঠন এবং এক সঙ্গে পথ চলা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সব ক্ষেত্রেই ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি। কিন্তু এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মধ্যে তেমন কোনো তাগিদ নেই বলে ওই নেতারা জানান।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে জোটের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের উদাসীনতা এটাই প্রতিয়মান হয় বলে তারা মন্তব্য করেন।
 
এ বিষয়ে ১৪ দলের আরেক শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোনো আগ্রহ দেখায়নি। পৌরসভা নির্বাচনে আমরা জোটগত অংশ গ্রহণের প্রস্তাব করেছিলাম, কিন্তু আওয়ামী লীগ সাড়া না দিয়ে নাকচ করে দেয়। শুধু এই নির্বাচনে নয় আগেও কখনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন আমরা জোটগতভাবে করতে পারিনি। এনিয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা নেই।

জোট শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মনে করি যেহেতু জোট আছে, এ নির্বাচন জোটগতভাবে করলে ভাল হয়। সেটা আওয়ামী লীগের উপর নির্ভর করে। তবে এটা করা খুব কঠিন। আওয়ামী লীগেরই প্রার্থী অনেক।

গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতিমন্ডলির সদস্য নুরুর রহমান সেলিম বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনও জোটগতভাবে করার আকাঙ্খা আমাদের আছে। যে সব জায়গায় জোটে শরিক দলের অবস্থা ভাল সেখানে সেখানে ছেড়ে দিয়ে জোটগতভাবে করা যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা করবে বলে মনে হয় না।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯ , ২০১৬
এসকে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।