ঢাকা: জাতীয় সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ। মঞ্চ সাজ-সজ্জা থেকে শুরু করে গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র সংশোধন-সংযুক্ত, আপ্যায়নসহ সম্মেলনের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।
‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার’- এই স্লোগানকে ধারণ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় দলের ২০তম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উৎসবমুখর, আনন্দঘন পরিবেশে ও জাকজমকপূর্ণ করতে দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সম্মেলনের ভেন্যু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ রাজধানী জুড়ে সাজ-সজ্জার কাজ চলছে পুরোদমে। ইতোমধ্যে রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তায় সাজ-সজ্জা করা হয়েছে। রাস্তায়-রাস্তায় পোস্টার, বিলবোর্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর আইটি উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং কোথাও কোথাও বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানার ছবি শোভা পাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতা, কাউন্সিলর, ডেলিগেট, দেশি-বিদেশি অতিথি ও দলের সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী সব মিলিয়ে ৬০-৭০ হাজার মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করেছেন দলের নেতারা।
এদিকে, গঠনতন্ত্র সংশোধন করে দলের কার্যনির্বাহী সংসদে পরিসর ৭৩ থেকে বাড়িয়ে ৮১ সদস্যের প্রস্তাব করা হয়েছে। এরমধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংখ্যা ১৫ জন থেকে বাড়িয়ে ১৯ জন, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক তিন থেকে বেড়ে চারজন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাত থেকে আটজন এবং কার্যনির্বাহী সদস্য আরও দু’জন বাড়ানো হচ্ছে।
তবে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, ৮১ সদস্য ঠিক করা হলেও এই সংখ্যা ৮৩ হতে পারে। এক্ষত্রে সদস্য দুইজনের জায়গায় চারজন হতে পারে। কারণ ইতোমধ্যে দুইটি প্রশাসনিক বিভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কুমিল্লা ও ফরিদপুর দুইটি নতুন বিভাগ হলে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকও আরও দুই জন বাড়বে। তখন কার্যনির্বাহী সদস্য থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হবে।
দলের ঘোষণাপত্রে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং ২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করার পরিকল্পনাগুলো প্রধান্য দেওয়া হয়েছে। সরকারের নেওয়া উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন এবং নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর ঘোষণাপত্রে জোর দেওয়া হয়েছে। গঠণতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রে এই খসড়া প্রস্তাবগুলো কাউন্সিলে পাশের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
এদিকে, সম্মেলনের ভেন্যু উদ্যানের চারপাশে ব্যাপক সাজ-সজ্জা করা হয়েছে। উদ্যানকে ঘিরে ছয়টি প্রবেশ পথ রাখা হয়েছে। এই প্রবেশ পথগুলোতে নির্মাণ করা হয়েছে সুসজ্জিত তোরণ। উদ্যানের ভেতরে তৈরি হচ্ছে বিশাল সম্মেলন মঞ্চ। এই মঞ্চটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে। মঞ্চটি লম্বা ১৫০ ফুট, চওড়ায় ৮৪ ফুট। মঞ্চের ছাদের উচ্চতা ৪২ ফুট। মঞ্চটি আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করা হচ্ছে। মঞ্চে ৬০ জন নেতার বসার ব্যবস্থা করা হবে। মঞ্চের সামনে প্রস্তুত করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল।
এছাড়া, রাজধানীর প্রবেশপথগুলো এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে শোভা পাচ্ছে সুসজ্জিত তোরণ। প্রায় প্রতিটি সড়কের আইল্যান্ড ধরে করা হয়েছে আলোকসজ্জা।
সম্মেলনে আসা কাউন্সিলর, ডেলিগেটসহ দলের নেতাকর্মী, দেশি-বিদেশি অতিথিসহ ৫০ হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুই দিনে তিন বার খাবার সরবরাহ করা হবে। সম্মেলন উদ্বোধনের দিন দুপুরে, রাতে এবং পরদিন দুপুরে খাওয়ানো হবে।
সম্মেলনের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সারা দেশ থেকে আসা কাউন্সিলর, ডেলিগেটসহ নেতাকর্মীদের সহযোগীতার জন্য এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে। তারা ৮০টি টিমে ভাগ হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশ পথে অবস্থান নিয়ে শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৬
এসকে/এনটি/টিআই