ঢাকা: বিদ্রুপ না শুনতে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দেয়নি বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
রোববার (২৩ অক্টোবর) বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা বিষয়টি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বেশকিছু কারণে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দেয়নি বিএনপি। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানোর পর দলের ভেতরে সম্মেলনে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও আলোচনার পর না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দলের নীতি নির্ধারকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) এখন বিএনপি নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে, নেতা কর্মীদের ক্রসফায়ার দিচ্ছে প্রতিদিনই। তারপর হত্যা, গুম ও মিথ্যা মামলা চলছে প্রতিদিনই।
তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট ভাবে ছয় সাতটি কারণ আছে যা সরকারি দলের গণতান্ত্রিক আচারণের মধ্যে পরে না। আর এসব কথা চিন্তা করেই না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি।
দু:খ করে এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ সকল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা আছে। আরো দেয়া হচ্ছে প্রতিদিন। এই (সরকারি) দলটিই রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট করেছে আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যোগ দেয়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যোগ দেয়নি বিএনপি।
তিনি বলেন, প্রথমত: বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদককে দাওয়াত দেয় বিএনপি। কিন্তু ঐ কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা যোগ দেননি বরং কাউন্সিল নিয়ে সরকারি দলের এক নেতা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বক্তব্য দেয়ায় বিএনপির তৃণমূল নেতারা ক্ষুব্ধ।
দ্বিতীয়ত: বিএনপি কাউন্সিল করতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চাইলেও দেয়া হয়নি। অনেক তালবাহানা শেষে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তন ও এর চত্বর এলাকা বরাদ্দ দেয়া হয় অনেক শর্তে। আর এসব কারণে বিএনপির সিনিয়র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
তৃতীয়: তাদের সম্মেলনের আগের দিনও বিএনপির নেতা কর্মীদের গ্রেফতার ও সম্প্রতি সাভারে যুবদল নেতাসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে ক্রসফায়ার দেয়া নিয়েই রয়েছে দলের ভেতরে নানা অসন্তোষ।
চতুর্থত: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়রানী অব্যহত থাকাও সম্মেলনে না যাওয়ার কারণ।
পঞ্চমত: সরকার দলীয় নেতাদের অগণতান্ত্রিক আচরণ। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান,বর্তমান চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে জড়িয়ে অশালীন বক্তব্য রাখার কারণেই সম্মেলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত।
ষষ্ঠত: আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দল দুটির মধ্যে রাজনীতিতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ নষ্ট করেছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ,সৌহার্দ্যপূর্ণ সর্ম্পক না থাকার কারণে ও গণতান্ত্রিক অধিকার সভা-সমাবেশ করতে না দেয়া এমনকি আলোচনা সভা পর্যন্ত করতে না দেয়ার কারণেই বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যোগ দেয়নি বিএনপি।
সপ্তমত: আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দেয়ার পরই সরকারি দলের নেতারাই বিদ্রুপ করে বলতো শেষ পর্যন্ত নাকে খতদিয়ে আসতে হলো। আওয়ামী লীগের কাছে নতি স্বীকার করলো বিএনপি। এতে নির্যাতিত বিএনপি মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দলের নেত্রীর ওপর ক্ষুব্ধ হতো। এসব কথা চিন্তা করেই সম্মেলনে যোগ দেয়নি বিএনপি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৬
এমএম/বিএস