ঢাকা: জনগণকে ভয় পায় বিধায় সরকার সমাবেশ করতে দিতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
শনিবার (০৫ নভেম্বর) রাতে গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের জেলা প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা প্রতি বছর ৭ নভেম্বর সমাবেশ করি। সে সমাবেশে ভাড়া করে লোক আনতে হয় না। দলের নেতা-কর্মীরা আসে। জনগণ আসে। কিন্তু এই অনির্বাচিত সরকার জনগণকে ভয় পায়। সেই জন্য তারা আমাদেরকে সমাবেশ করতে দিতে চায় না।
তিনি বলেন, তবে এভাবে দীর্ঘ দিন চলতে পারে না। জোর করে মানুষকে ঘরে বন্দি রাখা যায় না। মানুষের মুখ বন্ধ করে রাখা যায় না। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সময় মতো আমরা বের হবো। কর্মসূচি পালন করবো।
দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি কারো কথা মত চলার জন্য নয়। আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ এটা সবাইকে বুঝতে হবে। শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য সব কিছু বিকিয়ে দিয়ে কারো দিক নির্দেশনায় চলব-তা হবে না। জাতীয়তাবাদী দল হিসেবে আমরা সেটা মেনে নিতে পারি না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই, জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। প্রতি মুহূর্তে নারীরা, ছোট ছোট মেয়েরা নির্যাতিত হচ্ছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তারা সরকারি দলেরই লোক। সরকারের মদদেই করছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।
দেশে গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন থাকলে এই সব ঘটনা ঘটতো না উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপরাধী যে দলেরই হোক তাকে শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু দলীয় পরিচয় থাকার কারণে কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে অপরাধ না করেও বিরোধী দলের লোকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আজীবন ক্ষমতায় থাকা-এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, তাদের লক্ষ্য হলো- দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র থাকবে না। থাকবে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা। এটি তারা অতীতেও করেছিল।
‘দেশে এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন গণতন্ত্র’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সংগ্রামটাই হলো গণতন্ত্রের জন্য, ক্ষমতার জন্য নয়। ক্ষমতা জনগণের হাতে। জনগণ যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমতায় বসাতে পারে। যাকে ইচ্ছা তাকে নামাতে পারে। ’
দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এখন প্রয়োজন নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করা। শুধু নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করলেই হবে না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এই দুটি জিনিস হলেই সকলে ভোট দিতে পারবে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। শান্তি ফিরে আসবে। ’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মহিলা দলের সহ সভাপতি নুরজাহান বেগম, জেবা খান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৬
এজেড/আরআই