ঢাকা: রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে তিন দফা চিঠি দিয়েও পুলিশের সম্মতি পায়নি বিএনপি।
এরপরও বিএনপিকে মোটেই গুরুত্বহীনভাবে দেখছে না পুলিশ।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে মানবপ্রাচীর তৈরি করেছেন প্রায় ৪০ জন পুলিশ। কেউ হয়তো দেখে প্রথমে ভাবতেই পারেন- কোনো বড় ধরনের অপারেশন চলছে এখানে।
সমান সংখ্যক পুরুষ ও নারী সদস্য দিয়ে তৈরি এ প্রাচীর ভেদ করে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে গিয়ে উটকো ঝামেলায় পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
সে কারণেই হয়তো রোববার নয়াপল্টন কার্যালয়ে বিএনপির খুব বেশি নেতা-কর্মী আসেননি। আর যারা এসেছেন তারা ভেতরেই অবস্থান করছেন।
দুপুর একটার দিকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন দলটির কার্যালয়ে ঢোকার সময় টিপ্পনি কেটে গেলেন।
কার্যালয়ের প্রধান ফটক পেছনে ফেলে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে নব্বইয়ের এই ছাত্র নেতা বলেন, ‘মেহমান হাজির!’
শুধু দাঁড়িয়ে থাকা ৪০ জন্য পুলিশ সদস্যই নয়। আরও অনেককে কার্যালয়ের নিচে খোলা কক্ষে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
মধ্যম সারির ৫/৬ জন কর্মকর্তা ওয়াকিটকি হাতে টহল দিচ্ছেন। মাঝে-মধ্যেই ওপ্রান্ত থেকে আসা নানা প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন তারা।
আশ-পাশের গলিতেও রয়েছেন প্রায় ২০/৩০ জন পুলিশ সদস্য। সেখানে দায়িত্বরত এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘কারো কারো কাছে বিষয়টি অহেতুক মনে হলেও সম্ভব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের এ অবস্থান। কারণ কোনো ঘটনা ঘটে গেলে শেষ পযর্ন্ত দায় আমাদের উপরই আসে। ’
তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কার্যালয়ের সামনে ও এর আশপাশে শতাধিক পুলিশ, রায়টকার, প্রিজন ভ্যান প্রস্তুত থাকলেও সেখানে উপস্থিত নেতার সংখ্যা শতাধিকও হবে না।
পূর্বঘোষিত সংবাদ সম্মেলনের জন্য দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল মালেক, জাসাসের সভাপতি এম এ মালেক, সহ দফতর সম্পাদক মনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদা বেগম হিরা, নির্বাহী সদস্য শামীমুর রহমান শামীমসহ ৩০/৪০ জন নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এই ক’জন নেতা-কর্মীর উপস্থিতির মধ্যেই পুলিশের টহল-অবস্থান নিয়েও বিএনপি কার্যালয়েও চলে নানা মন্তব্য।
কেউ কেউ বলছেন, সরকার বিএনপিকে প্রচণ্ড ভয় পায়, তাই কোনো কারণ ছাড়াই কার্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ দাঁড় করিয়ে রাখছে।
এর আগে গত ৮ নভেম্বর সমাবেশ করতে চাওয়ায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। রোববারও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার কথা ছিলো দলটির।
কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি। উল্টো কার্যালয়ের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে সরকার দলটির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে বাঁধা সৃষ্টি করেছে বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা কোনো গণতন্ত্র হতে পারে না। কিন্তু এই সরকারের গণতন্ত্র এটাই। তারা এ গণতন্ত্রই চর্চা করছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
এজেড/এমএ