ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সার্চ কমিটি

সরকারের নৈতিক পরাজয় হিসেবে দেখছে বিএনপি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
সরকারের নৈতিক পরাজয় হিসেবে দেখছে বিএনপি

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য গঠিত সার্চ কমিটি নিরপেক্ষ হয়নি বলেই ধরে নিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি এ কমিটি নিরপেক্ষ করতে না পারার বিষয়টিকে সরকারের ‘নৈতিক পরাজয়’ হিসেবে দেখছে দলটি।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সার্চ কমিটি গঠন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর রাত ৮টার দিকে বিএনপির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আসেন। এরপর রাত পৌনে ১০টায় গুলশান কার্যালয়ে ঢোকেন খালেদা জিয়া।


 
সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, মো. শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে নিয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হন তিনি। এ বৈঠকে অনিবার্যভাবেই সার্চ কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়।

সূত্রমতে, এ আলোচনায় অংশ নিয়ে দলটির নেতারা বলেন, খালেদা জিয়ার দেওয়া ১৩ দফা প্রস্তাবে সার্চ কমিটি গঠনের ব্যাপারে যে প্রস্তাবগুলো সন্নিবেশিত হয়েছিল, সেগুলো আমলে না নিয়ে সরকার নৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে। সরকারের মধ্যে ন্যূনতম সমঝোতাবোধ এবং বিএনপিকে আস্থায় আনার সদিচ্ছা থাকলে খালেদা জিয়ার দেওয়া প্রস্তাব আমলে নিত।
 
বিএনপি পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠনের জন্য একটি কাঠামো প্রস্তাব করেছিল। তাতে অবসরপ্রাপ্ত এবং লাভজনক পদে নেই এমন ব্যক্তিদের দিয়ে সার্চ কমিটি করার কথা বলা হয়েছিল। আর রাষ্ট্রপতির গঠন করা সার্চ কমিটির ছয় সদস্যের সবাই কর্মরত।
 
এক্ষেত্রে বিএনপি নেতাদের মত হলো- রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে খালেদা জিয়া যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছিলেন সেগুলো আমলে নিয়ে একটা নিরপেক্ষ সার্চ কমিটি গঠন করতে পারলে সেটা সরকারের জন্যই ভালো হতো। কারণ নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে দেশ এক ধাপ এগিয়ে যেত। কিন্তু সেটি না করে রাষ্ট্রের লাভজনক পদে থাকা ৬জন ব্যক্তিকে দিয়েই গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি। এই কমিটির কাছ থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন আশা করা যায় না।
 
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হচ্ছে। নতুন কমিশন গঠনের জন্য ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি।  

বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটিতে আছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মাসুদ আহমেদ, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য শিরীণ আখতার।

গত বছরের ১৮ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশন গঠন ও শক্তিশালী করার বিষয়ে একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাতে সার্চ কমিটির এই প্রস্তাবটি ছিল।
 

বিএনপির প্রস্তাবে বলা হয়েছিল নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে বাছাই কমিটি হবে পাঁচ সদস্যের। বাছাই কমিটির আহ্বায়ক হবেন একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি (জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে), যাঁকে নিয়ে বিতর্ক নেই এবং অবসরের পর সরকারের কোনো লাভজনক পদে ছিলেন না।
 
আর অন্য সদস্যরা হবেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত সৎ এবং দলনিরপেক্ষ একজন সচিব (তবে অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন, এমন কোনো কর্মকর্তা বাছাই কমিটির সদস্য হতে পারবেন না); অবসরপ্রাপ্ত সৎ এবং দলনিরপেক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, যিনি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ হিসেবে সুখ্যাত এবং সর্বজনশ্রদ্ধেয় দলনিরপেক্ষ একজন সৎ, দক্ষ ও যোগ্য জ্যেষ্ঠ নারী।
 
কিন্তু রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটির ক্ষেত্রে বিএনপির এসব প্রস্তাবের একটিও মানা হয়নি। এই এক তরফা সিদ্ধান্তকেই ক্ষমতাসীনদের নৈতিক পরাজয় হিসেবে দেখছে বিএনপি।
 
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ডেফিনেটলি! এটা সরকারের নৈতিক পরাজয়। তারা চাইলেই বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রস্তাবগুলো আমলে নিয়ে নিরপেক্ষ সার্চ কমিটি গঠন করতে পারত।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
এজেড/পিসি


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।