আমি আগেও মধুমেলায় এসেছি। কিন্তু সাজসজ্জায় আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ছবি ও দলীয় স্লোগানের প্রকট উপস্থিতি লক্ষ্য করিনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত মধুমেলার ষষ্ঠ ও সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগামীতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে আয়োজকদের নজর রাখতে বলেন। মন্ত্রী অন্য বক্তাদের উদ্দেশে বলেন, এ মঞ্চ মধুসূদনের বিষয়ে কথা বলার জন্যে। রাস্তাঘাটের বিষয়ে দাবি করার জন্যে নয়। এখানে মধুকবির বিষয়ে আলোচনা করলে কেউ হাততালি দেয় না, কিন্তু রাস্তাঘাটের কথা বললে হাততালি দেওয়া হয়। এটি ঠিক নয়।
তিনি আরো বলেন, দেশের রাস্তাঘাটের সব তথ্য আমার কাছে আছে, সংস্কার করার মতো রাস্তা থাকলে তা সংস্কার করা হবে। এর জন্যে মধুমঞ্চে দাবি জানানোর কোনো মানে নেই।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদনের কাব্য প্রতিভা, দেশপ্রেম এবং বাংলাভাষার প্রতি ভালোবাসার বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মহাকবির কারণে বাংলা ভাষার আন্দোলন, ভাষা আর দেশের প্রতি ভালোবাসার কারণে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আর এই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি আমাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি আমরা।
ওবায়দুল কাদের এসময় মহাকবি মধুসূদন পদক ২০১৭ ভূষিত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামকে সার্চ কমিটির সদস্য করায় রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তার মতো একজন অরাজনৈতিক ও যোগ্য ব্যক্তিকে সার্চ কমিটির ছয়জনের একজন করেছেন রাষ্ট্রপতি, এটি অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার বিষয়।
এসময় মন্ত্রী মহাকবি মধুসূদন পদক ২০১৭ প্রাপ্ত কবি নির্মলেন্দু গুণের হাতে এবং আরেক পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের পদক ও সম্মাননাটি অপর কবি মারুফুল ইসলামের হাতে তুলে দেন।
যশোর জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, কবি নির্মলেন্দু গুণ, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলন প্রমুখ।
এসময় অনেকের মধ্যে যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহ হাদীউজ্জামান, যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এবং যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, যশোরের কেশবপুর উপজেলা শহর থেকে কবির জন্মস্থান সাগরদাঁড়ি পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে অসংখ্য তোরণ। এসব তোরণে দলীয় নেতাদের ছবির সঙ্গে স্থানীয় এমপি ইসমাত আরা সাদেক এবং তার স্বজন জেলা পরিষদের সদস্য হাসান সাদেক ও সোহরাব হোসেনের ছবি ছিল। মহাকবির পরিবর্তে দলের নেতাদের ছবি দেখে ওবায়দুল কাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এর আগে, ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে মহাকবির জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে পৌঁছান ওবায়দুল কাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৭
ইউজি/এসআই