তবে দুর্নীতি দুই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য দেওয়ায় ফের সময় পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এজন্য আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ এ জে মোহাম্মদ আলী, আব্দুর রেজাক খান, জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ১০/১২ জন আইনজীবী।
দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোশাররাফ হোসেন কাজল। এ সময় ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশেষ জজ আদালতের আসেন খালেদা জিয়া।
বিচারক তার আদেশে বলেন, এ মামলার অভিযোগ গঠন হয়েছে প্রায় তিন বছর হতে চললো। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইন অনুযায়ী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হয়। মামলার শেষ পর্যায়ে এসে এ ধরনের আবেদনের সুযোগ নেই। তাই আবেদন নাকচ করা হলো।
এই আদেশের পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা হট্টগোল শুরু করেন। এ সময় আদালত খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রক্রিয়া শুরু করেন এবং আদালত অরফ্যানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার ৩২ সাক্ষীর দেওয়া সাক্ষ্য পড়ে শোনান। পরে বিচারক মামলার আসামি খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চান- তিনি দোষী না নির্দোষ।
এ সময় আদালতের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আমার আইনজীবীরা আদালতের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। আমি এ আদালতের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছি।
পরে খালেদার আইনজীবীরা সময় চেয়ে আবেদন করলে বিচারক দুই মামলার শুনানির জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করে দেন।
আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি ওই দুই মামলার পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনের শুনানির দিনও ছিল বৃহস্পতিবার।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’র নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) এ মামলায় ৩০ জানুয়ারি আত্মপক্ষ সমর্থনে খালেদা জিয়াকে হাজির হতে নির্দেশ দেন আদালত। অন্যথায় আইনানুযায়ী তার জামিন বাতিল করা হবে বলেও জানান।
একইদিন হাজির না হওয়ায় এ মামলার আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়া-তারেক রহমানসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য চার আসামি হলেন, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।
ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তার উদ্দেশে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়নু:
আদালত চত্বরে খালেদা
খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারিন ০২, ২০১৭/আপডেট ১৮৫৬, ২০২০
ইএস/বিএস/আইএ