ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রাজনীতির কৌশলের খেলায় বিএনপি দুগ্ধপোষ্য শিশু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৭
রাজনীতির কৌশলের খেলায় বিএনপি দুগ্ধপোষ্য শিশু

ঢাকা: শাহদাত হোসেন সেলিম। বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতিতে যে দু’চারজন তরুণ রাজনীতিক তাদের তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, ক্ষুরধার বক্তব্য, হৃদয়গ্রাহী উপস্থাপন ও জোরালো যুক্তি দিয়ে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তিনি। তবে এই পরিচয়টি দিয়ে শাহদাত হোসেন সেলিমের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে ব্রাকেটবন্দি করা যাবে না।

এর পেছনের গল্পটাও মোটা-মুটি সমৃদ্ধশালী।
 
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান যখন ছাত্রদল গঠন করেন, তখন শাহদাত হোসেন সেলিম ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক। পরে চট্টগ্রাম বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হন। কিন্তু ২০০০ সালে বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতার রোষানলে পড়লে সরে দাঁড়ান দল থেকে।
 
বিএনপি থেকে বেরিয়ে ২০০৬ সালে ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ এলডিপি গঠনে হাত দিলে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শাহদাত হোসেন সেলিম। দল গঠনের পর দায়িত্ব পান সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের। ২০১২ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোট সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৮ দলীয় জোটে রূপান্তরিত হয়। সেখানে এলডিপিকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন শাহদাত হোসেন সেলিম।
 
টিভি টক শো’র মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এই রাজনীতিক শুক্রবার (০৩ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে রাজনীতিতে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন। ওই স্ট্যাটাসে তিনি পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ‘রাজনীতির কৌশলের খেলায় বিএনপি দুগ্ধপোষ্য শিশু’।
 
নিচে শাহদাত হোসেন সেলিমের স্ট্যাটাস সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরা হলো-
 
গেল কয়দিন ধরে আলোচনা চলছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপিসহ জোটভুক্ত দলের নিবন্ধন বাতিল হবে। এটা ঠিক সংসদ নির্বাচন করতে হলে নিবন্ধন বাধ্যতাম‍ূলক এবং পর পর দু’দফা নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।

রাজনীতি হলো কৌশলের খেলা, দাবার চাল। জিদ নয়, কৌশল দিয়েই রাজনীতি মোকাবেলা করতে হয় এবং এ কৌশলের খেলায় বিএনপি অত্যন্ত অপরিপক্ক, কাঁচা, ক্ষেএ বিশেষে দুগ্ধপৌষ্য শিশু।

আর যে কোনো সংকটে তো বিএনপির অবস্থা আরো করুণ। একেবারে ছেড়াবেরা। সহজ বিষয়কে জটিল করে তালগোল পাকিয়ে একেবারে লেজে গোবরে করতে  সিদ্ধহস্ত বিএনপি। এ ক্ষেত্রে বিএনপির জুড়ি মেলা ভার। আর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তহীনতা বিএনপির অন্যতম ভূষণ। সকালের কাজ মধ্যরাতে করা বিএনপির ঐতিহ্য, অহংকার!

তারপরও বিএনপি আমাদের একমাএ অবলম্বন। দেশের মানুষের ও আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক এ দল। জিদ ও আবেগ দিয়ে নয়, কৌশলেই এ ফ্যাসিবাদী সরকারকে মোকাবিলা করতে হবে।

বলছিলাম নিবন্ধন বাতিলের বিষয়। এ ক্ষেত্রে আগামী যে কোনো সংসদ উপ নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে অংশ নিতে হবে কৌশলের অংশ হিসেবে। ঘোষণা দিতে হবে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও যোগ্যতা যাচাই করতেই এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ। এতে চাপে পড়বে নির্বাচন কমিশন। ব্যাস কেল্লা ফতে।
 
বিএনপি তখন ভারমুক্ত। নিবন্ধন বাতিলের জিকির তুলে জুজুর ভয় দেখিয়ে যে টেনশন সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা বুমেরাং হবে। জাতীয় আন্তর্জাতিক শক্তি বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে মরিয়া হয়ে উঠবে। টেনশনে মাথা খারাপ হয়ে যাবে সরকারের। মনে রাখতে হবে "টেনশন লেনেকা নেহী দেনেকা"।
 
‘‘https://web.facebook.com/shahadathossain.salim’’
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৭
এজেড/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।