রোববার (০২ এপ্রিল) বেলা ১টায় ভাঙচুরের বিষয়ে অভিযোগ করেন ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবিউল আলম মিলুসহ অনেকে।
ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ এসে মেয়র সমর্থকদের নগর ভবন থেকে বের করে দেন।
মেয়র সমর্থকরা চলে যাওয়ার পর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজশাহী সিটি করেপারেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম শরিফ উদ্দিন।
বৈঠকে এক পর্যায়ে সাংবাদিকরা ঢুকে পড়লে শরিফ উদ্দিন বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রাণলয় থেকে যেহেতু নির্দেশনা রয়েছে কেন মেয়রের কক্ষে তালা দেওয়া থাকবে। বিষয়টি খুবই ন্যক্কারজনক। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
তিনি বলেন, প্রতিদিনি রাতে রুমে তালা দেওয়া হয়। সকালে খুলে দেওয়া হয়। আজ কেন খোলা হয়নি বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেয়রকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে দেখি কোনো কাগজ পৌঁছেছে কি না। পৌঁছালে অবশ্যই কাউন্সিলর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম উল আযীমের সঙ্গে বসে নির্বাচিত মেয়রকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
এর আগে সকালে সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব বুঝে নিতে নগর ভবনে যান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গিয়ে দেখেন নিজ কক্ষে তালা ঝুলছে।
উচ্চ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে মেয়র রোববার (০২ এপ্রিল) সকালে নগর ভবনে যান। গিয়ে দেখেন কক্ষে তালা দেওয়া হয়েছে। নগর ভবনে নেই দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম উল আযীম ও নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরিফ উদ্দিন।
আদালতের রায়ের পর রোববার (০২ এপ্রিল) মেয়র পদে দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু নিজ কক্ষে তালা থাকায় তিনি নগর ভবন সচিব খন্দকার মো. মাহবুবুর রহমানের কক্ষে অবস্থান নেন।
সচিব বলেন, মেয়র হিসেবে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার মতো মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিঠি আমরা পাইনি।
মেয়র বলেন, গত ২৭ মার্চ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি নগর ভবনে চিঠি পৌঁছেছে। কিন্তু তারা বলেন কোনো চিঠি পাননি।
বুলবুল বলেন, আমি সিটি করপোরেশনের বৈধ মেয়র। উচ্চ আদালতের লিভ টু আপিলের রায়ের পর আমার ক্ষমতা গ্রহণে কোনো বাধা নেই। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি মন্ত্রণালয় থেকে নগর ভবনে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম উল আযীম ও নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শরিফ উদ্দিন নগর ভবনে নেই।
মেয়রের সঙ্গে নগর ভবনে আসা দলীয় নেতাকর্মীরা ভিড় করছেন। মেয়র কক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় নগর ভবনের সামনে হই-হুল্লোড় করছেন তারা। একরকমের উত্তেজনাও বিরাজ করছে সেখানে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৫ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু করে। ওই সময় পুলিশ সদস্য সিদ্ধার্থ হত্যাসহ সন্ত্রাসবিরোধী চার মামলায় বুলবুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। পরে নগর বিএনপির সভাপতি মেয়র বুলবুলকে ২০১৫ সালের ৭ মে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের অবরোধ-হরতাল চলকালে মোট ১৭টি মামলার আসামি হন রাসিক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এর মধ্যে চার মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এই চার মামলার মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ সরকার হত্যা মামলাও রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকার পর সবগুলো মামলায় জামিন পান বুলবুল।
তিনি ২০১৩ সালের ১৫ জুনের সিটি নির্বাচনে এক লাখ ৩১ হাজার ৫৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। ওই বছরের ২১ জুলাই তিনি মেয়র হিসেবে শপথ নেন। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালের ১৫ জুন তার পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে।
**দায়িত্ব নিতে নগর ভবনে বুলবুল, মেয়র কক্ষে তালা
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭
এসএস/বিএস