মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) বিকেলে নয়াপল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপি’র এ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম তরিকুল ইসলাম, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমদু চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, নিতাই রায় চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী ৭ এপ্রিল ৪ দিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন। এ সফর নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলে জল্পনা-কল্পনা চলছে।
বলা হচ্ছে-নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, পারমাণবিক সহযোগিতাসহ জ্বালানি, মহাকাশ, রেল, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো ও অন্যান্য বিষয়ে দুই ডজনের মতো চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
ভারতের সদ্য সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর, সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও পররাষ্ট্র সচিব জয়শংকরের ঢাকা সফরের ফলে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের ধারণা আরো ঘনীভূত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, শোনা যাচ্ছে ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি বা এমওইউ চুক্তি হতে যাচ্ছে। কিন্তু এই চুক্তি বা সমঝোতা স্মারকে কী আছে- তা আদৌ স্বচ্ছ নয়। জনগণ এ চুক্তি বা সমঝোতা সম্পর্কে একেবারেই অন্ধকারে।
আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরের আগেই সে দেশের সঙ্গে যে সকল চুক্তি, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলো জনগণের উদ্দেশে প্রকাশ করবে সরকার। জনগণকে পাশ কাটিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, জনস্বার্থ ও রাষ্ট্রবিরোধী কোনো চুক্তি অথবা স্মারক সই হলে দেশবাসী মেনে নেবে না-বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এই মুহূর্তে ভারতের সঙ্গে আলাদা কোনো প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রয়োজন আছে বলে বিএনপি মনে করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার দাবি করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বর্তমানে সর্বকালে উষ্ণতম পর্যায়ে আছে। সেক্ষেত্রে এই মুহূ্র্তে বাংলাদেশ কেন ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করবে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।
ফখরুল বলেন, ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় প্রতিরক্ষার নামে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ চুক্তি হবে। এ টাকা দিয়ে ভারত থেকেই অস্ত্র কিনতে হবে বাংলাদেশকে।
যে দেশ নিজেই অস্ত্র আমদানিতে এক নম্বর, সে দেশের কাছ থেকে বাংলাদেশ কেন অস্ত্র কিনতে যাবে?-প্রশ্ন বিএনপির মহাসচিবের।
তিনি বলেন, সাশ্রয়ী ও আধুনিক চীনা অস্ত্র ও সরঞ্জামে সজ্জিত আমাদের প্রতিরক্ষাবাহিনীর জন্য ভারতের তৈরি অধিক দামের অস্ত্র ক্রয় কতটুকু যৌক্তিক-তা নিশ্চয়ই প্রশ্নের দাবি রাখে। অস্ত্র তৈরিকারী নতুন দেশ হিসেবে ভারত সমরাস্ত্র বিক্রির জন্য বাংলাদেশকে নিশ্চিত ‘ক্যাপ্টিভ মার্কেট’ হিসেবে পেতে চায় বলে আমাদের ধারণা।
‘প্রতিরক্ষা চুক্তি না করার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিঠি দেবেন কি না’-? একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা তো এখনো জানি না কী হতে যাচ্ছে। সরকারও কিছু জানায়নি। কীসের উপর ভিত্তি করে চিঠি দেব।
‘প্রতিরক্ষা বা সামরিক চুক্তি হলে বিএনপি কর্মসূচি দেবে কি না’?-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে চুক্তি হোক। তার পর দেখা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এজেড/আরআই