রোববার (৯ এপ্রিল) রাতে গুলশানে তার রাজনৈতিক কাযালয়ে দেখা করতে আসেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জয়ী বিএনপি সমর্থিত ‘নীল প্যানেল’র নেতারা। তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে এই মুহূর্তে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরের শুরু থেকেই বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে আসছিলেন, এই সফরে প্রতিরক্ষা চুক্তিসহ দেশবিরোধী বেশ কয়েকটি চুক্তি করবেন শেখ হাসিনা।
শনিবার (৮ এপ্রিল) রাতে দেওয়া এক বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এরইমধ্যে সব বিক্রি করে দিয়েছে। আরও বোধ হয় যেটুকু বাকি আছে, সেটুকুও বিক্রি করে আসবে’। চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবধানে রোববার ফের তিনি বললেন, ‘আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশ বিক্রি করে দিয়েছে। পাঁচ বছর পরে কাগজে কলমে লিখে দিয়ে বিদায় নেবে। ’
খালেদা জিয়া বলেন, ২০১৪ সালে তারা (আওয়ামী লীগ) একতরফা (অনসাইড) নির্বাচন করেছে। ভবিষ্যতেও তারা একই পরিকল্পনা করছে-কীভাবে তারা ক্ষমতায় আসবে? ভোট হবে না চুরি-চামারী করবে। ছাত্রলীগ, গুণালীগ-তাদের সবার হাতে অস্ত্র। তাদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা নির্বাচনে জেতে।
জামায়াতের সঙ্গে এখনো আওয়ামী লীগের সখ্য আছে
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের এখনো সখ্য আছে মন্তব্য করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, যে কোনো সময় এই সখ্য তারা কাজে লাগাবে।
তিনি বলেন, লালদিঘীর ময়দানে উনি (শেখ হাসিনা) কথা দিলেন এরশাদের অধীনে যারা নির্বাচনে যাবে, তারা জাতীয় বেঈমান হবে। তারপর রাতারাতি আঁতাত করে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে তারা গেলো। কিন্তু আওয়ামী লীগ তো আর সঙ্গী খুঁজে পায় না। কাউকে না নিয়ে গেলে, একলা গেলে তো খারাপ দেখায়, সেই জন্য কী করল, জামায়াত ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে গেলো। এখন জামায়াত ইসলাম রাজাকার।
‘তখন নিজামীর সঙ্গে ফটোটটো আছে। মওদুদ সাহেবও স্বাক্ষী আছেন’-পাশে বসা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে ইঙ্গিত করে বলেন খালেদা জিয়া।
মওদুদ আহমদ মাথা নেড়ে অস্বীকার করলে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিএনপিতে আসবেন বলে ছবি-টবি আপনি রাখেন নাই!’ আমরা তো দেখেছি, কারা কীভাবে মিটিং করেছিলো, কেউ সালাম করছে, কেউ কদমবুচি করছে, নানা ধরনের অঙ্গ-ভঙ্গির ছবি আছে। তো জামায়াতের সঙ্গে সখ্য কাদের বেশি ছিলো? তাদের ছিলো।
এখনো বন্ধুত্ব ঠিকই আছে, যায়নি। বিএনপিকে হারানোর জন্য সেগুলো তারা ঠিক রেখেছে এবং সময় মতো তারা ব্যবহারও করে বলেন বিএনপি-জামায়াতা জোটের নেতা খালেদা জিয়া।
সেনা সমর্থিত ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকারের অধীনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে জামায়াতের আগ্রহই বেশি ছিলো ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে যাওয়াটা আমার খুব আপত্তি ছিলো। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যারা ছিলো তারা খুব বেশি আগ্রহী ছিলো, নির্বাচনে যেতেই হবে। নির্বাচনে না গেলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি! তখন তাদের কথা শুনে আমরা নির্বাচনে গেলাম।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন ও যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২৪১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৭
এজেড/আরবি