ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

খালেদা জিয়াকে ৫ অক্টোবর আত্মসমর্পণের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
খালেদা জিয়াকে ৫ অক্টোবর আত্মসমর্পণের নির্দেশ

ঢাকা: যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগের মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

 

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. নূর নবীর আদালত আগামী ০৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের এ নির্দেশ দেন।

মামলার বাদী জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

সমন জারি হলেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না হওয়ায় গত ১১ জুন অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

আদালত আদেশে বলেন, ‘মামলাটিতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করা হলেও তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ গুরুতর নয়। শুধুমাত্র মানহানি সংক্রান্ত, যা জামিনযোগ্য। আসামিকে আগামী ০৫ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া গেল। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।

মামলার বাদী এ বি সিদ্দিকীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এ বি এম মশিউর রহমান আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।   গত ২২ মার্চ তা আমলে নিয়ে খালেদা জিয়াকে গত ১১ জুন হাজির হতে সমন জারি করেছিলেন আদালতে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রিপরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা প্রকাশ্য ও আত্মস্বীকৃত পাকিস্তানের দোসর হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন- সেই জামায়াত, শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর ও  আলশামস সদস্যদের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য (এমপি) বানান। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন’।

‘তাদের মধ্যে খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রিত্বপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মুত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালে মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি-গাড়িতে ব্যবহার করেছেন’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের তার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব প্রদান করে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে ওই স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারার মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করা হলো’।    

গত বছরের ০৩ নভেম্বর এ বি সিদ্দিকী ‘স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে ঢাকার সিএমএম আদালতে মানহানির মামলাটি দায়ের করেন। ওইদিন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল ইসলামের আদালত তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার প্রয়াত স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর কলঙ্কিত মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ০৭ নভেম্বর  সামরিক সরকারের দায়িত্ব দখল করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন'।

‘১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এলে তাকে হুমকি দিয়ে তার বাবার বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি। এছাড়া খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে স্বাধীনতাবিরোধী আলবদর-রাজাকারদের হাতে মন্ত্রিত্ব তুলে দেন। যার মাধ্যমে স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটিয়েছেন’।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
এমআই/এমএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।