ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রায় পরবর্তী পরিস্থিতি প্রশাসনিকভাবেই মোকাবেলা

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৮
রায় পরবর্তী পরিস্থিতি প্রশাসনিকভাবেই মোকাবেলা

ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যেকোনো পরিস্থিতি প্রশাসনিকভাবেই মোকাবেলার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এ রায়কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা যাতে না হয় সেজন্য সতর্ক রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
 

৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণা করা হবে। রায়কে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এই রায়ের পর বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিকরা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করতে পারে বলে সরকার আশঙ্কা করছে।  

বিশেষ করে গত ৩০ জানুয়ারি আদালতে হাজিরার পর খালেদা জিয়ার ফেরার সময় পুলিশ দুই জনকে আটক করলে বিএনপি কর্মীরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করে ও প্রিজন ভ্যান ভেঙে তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির আশঙ্কা আরো বেড়ে গেছে। এ ঘটনাকে সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখছে সরকার। এরপর পরই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সকল বাহিনীকে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সরকার ও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। ইতোমধ্যে বিএনপির বেশকিছু নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের আরো অনেক নেতাকর্মী আটক হতে পারে বলে ওই সূত্রগুলো জানায়। তবে পরিস্থিতি যাতে রাজনৈতিকভাবে সহিংস হয়ে না ওঠে সে ব্যাপারে ক্ষমতাসীনরা অত্যন্ত সতর্ক রয়েছে।  

বিএনপিকে মোকাবেলায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা মাঠে নামলে মুখোমুখি সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক সহিংসতা তৈরি হতে পারে। সে ধরনের পরিস্থিতিতে যেতে চায় না আওয়ামী লীগ। এজন্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই কাজে লাগাবে সরকার।  

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) যুবলীগের এক সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কোনো উস্কানি দেবো না। কোনো উস্কানিতে পা-ও দেবো না। তবে তারা (বিএনপি) যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা যা প্রয়োজন তাই করবে। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা মাথায় মোকাবেলা করতে হবে।
 
এদিকে, আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি বা সহিংস অবস্থানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে রাজনীতির মাঠ যাতে বিএনপি দখলে নিতে না পারে সেদিকেও সতর্ক অবস্থানে থাকবে দলের নেতাকর্মীরা। খালেদা জিয়ার রায়ের দিন আওয়ামী লীগের ঘোষিত কোনো কর্মসূচি থাকবে না। তবে রাজধানীসহ সারাদেশের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সংগঠিত ও সতর্ক অবস্থানে থাকবে। পাড়া, মহল্লায় কোথাও কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির কেউ চেষ্টা করলে, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগে ফেললে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আনতে হবে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সংযোগিতা করতে হবে। এ ব্যাপারে সারাদেশেই দলের নেতাকর্মীর কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, এই রায়ের পর কেউ যদি পরিস্থিতি অশান্ত করতে চায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত থাকবে, সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। অতীতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দক্ষতার সঙ্গে বিশৃঙ্খল পরিবেশ মোকাবেলা করেছে। এখন তারা আগের চেয়ে অনেক দক্ষ।
 
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির চেষ্টা হলে সেটা দমন করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। সবদেশে সর্বক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও সতর্ক থাকবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৮ 
এসকে/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।