ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ক্ষমতায় গেলে কোটার সংস্কার করবে বিএনপি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৮
ক্ষমতায় গেলে কোটার সংস্কার করবে বিএনপি সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ/ছবি: আবু বকর

সিলেট রেজিস্ট্রার মাঠ থেকে: মেধাকে প্রাধান্য দিয়ে কোটা প্রথার সংস্কারের দাবির আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে মন্তব্য করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ছাড়া সব কোটা বাতিল করা হবে। 

মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে সিলেট মহানগরীর রেজিস্ট্রার মাঠে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।  

খন্দকার মোশাররফ বলেন, চাকরি প্রত্যাশী ও ছাত্র-যুবকরা কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন করছে সরকার পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে লাঠিপেটা করছে, টিয়ারশেল ছুড়ছে, আহত করছে।

তাদের দাবিটা কি? তাদের দাবি হলো, চাকরিতে মেধার মূল্যায়ন করতে হবে। আজকে জাতি মেধাশূন্য হয়ে যাচ্ছে।  

বর্তমানে ৫৬ শতাংশ কোটা আর ৪৪ শতাংশ মেধায় নিয়োগ হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা মনে করি মেধার মূল্যায়নে কোটা সংস্কারের যে আন্দোলন হচ্ছে তা যৌক্তিক।  আমাদের নেত্রী ২ বছর আগে ভিশন ২০৩০ ঘোষণা করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছে, জনগণ যদি আমাদের ক্ষমতায় বসায় তাহলে ভিশন ২০৩০ সালে যা আছে তা বাস্তবায়ন করা হবে। ভিশন ২০৩০ তে কোটা সম্পর্কে বলা হয়েছে বিএনপি ক্ষমতায় এলে মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ছাড়া সব কোটা বাতিল করা হবে।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের উপরে আজকের আন্দোলন হচ্ছে। কিন্তু এই স্বৈরাচারী সরকার সেই আন্দোলনকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে। আজকে ছাত্ররা আন্দোলন করছে, আমরা আন্দোলন করছি। স্বৈরাচারী সরকার যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। স্বৈরাচার সাময়িক টিকে থাকলেও তাদেরও একদিন মাথা নত করে বিদায় নিতে হবে।  

মোশাররফ বলেন, এই স্বৈরাচারী সরকার মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়েছে। একটাই কারণ তা হলো আগামী নির্বাচন। আগামী নির্বাচনে বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে বাইরে রেখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। শেখ হাসিনা জনগণকে ভয় পায়, তাই তিনি জনগণের সামনে আসতে ভয় পায়। কারণ তারা জানে যে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, জনগণ তাদের পরাজিত করবে।  

খালেদা জিয়াকে রেখে তারা বিএনপিকে দুর্বল করতে চাই জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের সেই ষড়যন্ত্র বুমেরাং হয়ে গেছে। বিএনপি সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধভাবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে তার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।  

যে আন্দোলনে স্বৈরাচারের পতন হবে সেই আন্দোলনের প্রস্তুত থাকতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।  

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকার বরাবরই সব কাজে বাধা দিচ্ছে, সব কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।  সরকার জনগণকে ভয় পায়, জনগণের মুখোমুখি হতে ভয় পায়, খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, তার জনপ্রিয়তাকে ভয় পায়। খালেদা জিয়াকে আপনারা দেখেছেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তার মনোবল একটুও হারায় নাই। তিনি নেতাকর্মীদের বলেছেন, আমার যা হয় হবে, তোমরা আন্দোলন চালিয়ে যাও।  

স্বৈরাচার, গণতন্ত্র আর উন্নয়ন একসঙ্গে চলতে পারে না জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে স্বৈরাচার হয়ে তারা খুন, গুম,  লুটপাট করেছে তার জবাব দিতে হবে। এইজন্য তারা জনগণকে ভয় পায়। বিচারের মুখোমুখি হওয়াকে ভয় পায় বলে স্বৈরাচারি আচরণ করছে। স্বৈরাচার কোথাও কখনো টিকতে পারে নাই। স্বৈরাচারকে বিদায় করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এই দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনে নামতে হবে।  

বিএনপির সিলেট মহানগরের সভাপতি নাসিম হুসাইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত আছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাই চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদিন ফারুক,  প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৮
এএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।