ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আবারো সংলাপের আহ্বান মান্না’র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৮
আবারো সংলাপের আহ্বান মান্না’র আলোচনায় মাহমুদুর রহমান মান্না ও অন্য অতিথিরা/ছবি- শাকিল

ঢাকা: আগের সংলাপে কিছুই পাইনি মন্তব্য করে আবারো সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, সংলাপের নামে তামাশা চলছে। এখন সরকার তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে সংলাপ করছে।

শনিবার (০৩ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নির্বাচন ভাবনা ও জন প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। ‘মাটির ডাক’ নামের সংগঠনের সভাপতি তাসনিম রানার সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি (বিএফইউজে) শওকত মাহামুদসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এতে বক্তব্য রাখেন।

এই সরকার জনগণের সঙ্গে সব ধরনের প্রতারণা করছে, তারই প্রমাণ হচ্ছে এই সংলাপ উল্লেখ করে মান্না বলেন, সংলাপে সংসদ ভেঙে নির্বাচন দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। আমরা যে দাবিগুলো করেছিলাম, তার মধ্যে ৩-৪টা দাবি আছে, যেগুলো সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কই নেই।

‘আর ২-৩টি বিষয় আছে যেগুলো আলোচনার প্রয়োজন আছে। চলেন সেগুলো নিয়ে, আজ না হয়, কাল বসি, বসে যত দ্রুত এই সাত দফার সামাধান করি। তত সময় পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা যাবে না। এটা বলা কি কোনো অন্যায় হয়েছে?’

মান্না বলেন, তারা খুব চালাক, তারা সংলাপে বলেন, আপনারা যখন বলবেন তখনি সংলাপে বসবো। ওহ… আমরা চাইবো, আপনারা চাইবেন না, বাহানা করতে থাকবেন? নাম না জানা দলের সঙ্গে ৮ তারিখ পর্যন্ত সংলাপ করবেন। এটা সংলাপ না কি সরকারের ‘সংয়ের’ সঙ্গে আলাপ।

তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট সিলেট ও চট্টগ্রামের জনসভার পর মানুষের মধ্যে উত্তাপ ও বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়ে জাগরণ তৈরি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে সংলাপ করে জনগণ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে।

সংলাপে তারা কোনো কিছু আমাদের দেয়নি উল্লেখ করে মান্না বলেন, সরকার বলে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এমন কোনো কাজ করবে না। সংবিধান এখন পর্যন্ত ১৬-১৭বার  সংশোধন হয়েছে, এটা কি সংবিধানের অন্তর্গত নয় বলে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন তিনি।

তিনি বলেন, শুধু আপনাকে রক্ষা করার জন্য সংবিধান থাকবে আর দেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্য কোনো কাজে লাগবে না, এটা কি হতে পারে? পৃথিবীর কোনো দেশের সংবিধান আছে, যেখানে হাত দেওয়া যাবে না এই নিয়ম আছে? বরং সংবিধান প্রতিনিয়তই সংশোধন হয়। আর সংশোধন করলে বেশি উন্নত হয়। এটা করতে সরকার রাজি নন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মান্না বলেন, আপনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের প্রধান নিরপেক্ষ হবে, আমরা তার নাম প্রস্তাব করি। আপনাদের যদি পছন্দ না হয়, তাহলে আপনারা প্রস্তাব দেন। কিন্তু আগে তো মানতে হবে? সংলাপ যদি না ডাকেন, জনসভা করে আমরা বলবো কোন পদ্ধতিতে এটা করবেন।

‘পাশাপাশি জনগণকে জানানোর জন্য রাজপথে থাকবো। আমরা প্রমাণ করতে চাই সরকার মিথ্যাচার করছে। যে রকমভাবে সংলাপের সময়ের খাবারের ছবি বাইরে দেখিয়ে-প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে। এদের মতলবই খারাপ। এটি একটি মতলবি সরকার। ’

আন্দোলনের হুমকি দিয়ে মান্না বলেন, ‘আপনি মনে করছেন রাস্তায় আন্দোলন করবো; পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে গুলি করে হত্যা করবেন। আমরা আপনাকে সেই সুযোগই দেবো না। এমন কায়দায় আন্দোলন করবো যখন আপনার বন্দুক ফুটবে না। এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হবে যখন আপনার হাতে কিছু থাকবে না। যেভাবে এগোন না কেন আপনার পতন অনিবার্য, আপনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না’।

বিএনপি-জেএসডি-গণফোরাম-নাগরিক ঐক্য মিলে গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।  

জোটের নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গত ১ নভেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়। এ সময় তারা সাত দফা দাবি তুলে ধরে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৮/আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা
এমএফআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।