ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দেশবাসীর মধ্যে উৎসব নেই, আছে হাহাকার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
দেশবাসীর মধ্যে উৎসব নেই, আছে হাহাকার প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি-বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পুলিশ, র‌্যাব দিয়ে ভোট ডাকাতি করে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে উৎসব করেছে আওয়ামী লীগ। দেশের মানুষের মধ্যে কোনো উৎসব নেই, আছে হাহাকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ আর কখনওই ভোটে জয়লাভ করতে পারবে না। কারণ দেশের মানুষ তাদের বিশ্বাস করে না।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন বিএনপি নেতা তোজাম্মেল হক হত্যার প্রতিবাদে সোমবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট এলাকায় আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, ভোট দেওয়ার অপরাধে নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা ও মা-বোনদের ধর্ষণ করেছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। ধানের শীষে ভোট দেওয়ার কারণে দেশের ২২ জন নিরাপরাধ সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। ৯৮ হাজার মিথ্যা মামলায় ২৬ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গায়েবী এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি রেখে পুলিশ দিয়ে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। টাকা না দিলে গায়েবী মামলায় গ্রেফতারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, এ ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে দূরে থাকুন। দেশের মানুষকে প্রতিপক্ষ করবেন না।

১৯৭১ সালে আমরা যে যুদ্ধ করেছি তার কারণ ছিল মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করা। সেই গণতন্ত্রকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লুট করে নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। আপনাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের কারণে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্ধকার কারাগারে রাখা হয়েছে। যিনি নয় বছর সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন, তাকে মিথ্যা সাজানো মামলায় ১১ মাস ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন, আমার মুক্তির জন্য নয়, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যান। মানুষের ভোটাধিকার তথা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন, যোগ করেন ফখরুল।

নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে আন্দোলন চলছে তা বেগবান ও শক্তিশালী করতে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীসহ সর্বসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে ভোটের আগে দেশের মানুষের মধ্যে যে উচ্ছাস ছিল, ভোটাধিকার হরণ করায় মানুষের মধ্যে এখন হাহাকার বিরাজ করছে। মানুষের মুখে হাসি নেই। বিগত ২০১৪ সালেও আওয়ামী লীগ একই কাজ করেছিল। তারা জোর করে ক্ষমতায় বসেছিল। আজও জোর করে ক্ষমতায় বসেছে।  

এসময় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
ঐক্যফ্রন্ট অংশ না নিলে দেশের জনতা বুঝতে পারতো না যে এমন বিশ্ব ডাকাতি সম্ভব। আমরা পাকিস্তানী হানাদারদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারি। কিন্তু এমন চুরি-ডাকাতির সঙ্গে আমরা যুদ্ধ করতে পারি না। শেখ হাসিনা ইতিহাস ভেঙ্গে দিয়েছেন।  

বিশ্বের কোনো দেশে নির্বাচনের পরে পুলিশ ভোজসভা করে না। আমাদের দেশে পুলিশরা চুরি করে ভোজসভা করে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় নয়, তাদের শ্রেষ্ঠ পরাজয় ঘটেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- কাদের সিদ্দিকী, আব্দুর রব, ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী, লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম মমিনুল হক, সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া লারমনিরহাট-২ আসনের এবারের ধানের শীষের প্রার্থী রোকন উদ্দিন বাবুলসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা।

প্রথমে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা রাজপুরের খলাইঘাট এলাকায় নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ওয়ার্ড বিএনপির নেতা তোজাম্মেল হকের কবর জিয়ারত করেন। এরপর নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে ১০ হাজার টাকা সহযোগিতা দিয়ে সমবেদনা জানান ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা। এরপর নিহত বিএনপি নেতার বাড়ির পাশে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।