ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যদের চিহ্নিতে কমিশন করবে সরকার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯
বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যদের চিহ্নিতে কমিশন করবে সরকার

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে জড়িতদের চিহ্নিত করতে সরকার কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি বিদেশে পালাতক সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের ফিরিয়ে আনাও সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে খুনিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। 

মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টম্বর) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব কথা জানান।  

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দণ্ডিত পালাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ’ শীর্ষক এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়।


 
আলোচনায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, কানাডার আইনে মৃত্যুদণ্ড নেই। যদি কোনো দেশের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সেখানে (কানাডা) গিয়ে আশ্রয় নেয় তাহলে তারা তাকে রেখে দেয়। তবে কানাডায় নূর চৌধুরীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়নি। আমরা তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য কানাডার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছি। আইনি এবং কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। একটু সময় হয়তো লাগবে। তবে কানাডা সরকার তাকে ফেরত দেবে।  

‘আর রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আগের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ বেড়েছে। অন্য চারজন যাদের খবর পাওয়া যাচ্ছে না, আমরা কিন্তু তাদের খুঁজে বের করার ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। অনেক কথা এখন বলা যাবে না। তবে আমাদের কাজ যেভাবে চলছে আমরা তাদের খুঁজে বের করে ফিরিয়ে আনতে সফল হবো। ’ 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনের নেপথ্যে কারা জড়িত ছিলো তাদের চিহ্নিত করতে একটি কমিশন করার ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিপরিষদে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।  

‘কমিশনে কারা থাকবেন, কার্যপরিধি কী হবে সেটা আলোচনা করা হবে। এই কমিশনের কাজ হবে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট এবং ৩ নভেম্বরের নেপথ্যে কারা জড়িত ছিল- তাদের খুঁজে বের করা। খুনিদের ফিরিয়ে আনা বা অন্য বিষয়ের সঙ্গে এই কমিশনকে যুক্ত করতে চাই না। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ’
 
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরী কানাডায় এবং রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছে। আমি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সাহায্য চেয়েছি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে। তারা আমাকে বলেছেন- ও (রাশেদ চৌধুরী) কি ওই নামে আছে, না ডেভিড নামে আছে? নূর চৌধুরী কানাডায় আছে। আমি কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও বলেছি, কোর্ট তো তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়নি, তাকে ফিরিয়ে দিন।  

‘তিনি বলেছেন, আলাপ আলোচনা চালিয়ে যান। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে চিঠি দিয়েছেন। আশা করি নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে পারবো। ’ 
গোলটেবিল আলোচনা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম।  

১৪ দলের পক্ষ থেকে তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর, বঙ্গবন্ধুর খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, যেসব দেশে খুনিরা পালিয়ে আছে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসীদের সংগঠিত করে ওইসব দেশকে চাপ দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং বঙ্গবন্ধুর খুনের পেছনে যারা জড়িত ছিলো তাদের স্বরূপ উন্মোচনের জন্য কমিশন গঠনের দাবি জানান।
 
গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাসদের কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল, সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাংবাদিক আব্দুল কাউয়ুম মুকুল, আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৯ 
এসকে/এমএ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।