ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘প্রতিহিংসার রাজনীতি করলে বিএনপির অস্তিত্ব থাকতো না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯
‘প্রতিহিংসার রাজনীতি করলে বিএনপির অস্তিত্ব থাকতো না’

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: আওয়ামী লীগ হত্যা ও প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করলে বাংলাদেশে বিএনপির অস্তিত্ব থাকতো না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য (এমপি) রুমিন ফারহানার এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়।

পড়ুন>ঘুমিয়ে দায়িত্ব পালন করি না: প্রধানমন্ত্রী

সংরক্ষিত আসনে বিএনপির এমপি রুমিন ফারহানা বলেন, দেশে বর্তমানে মানুষ হত্যা থেকে মশা মারা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রয়োজন হয়।  

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষ হত্যার রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতেও বিশ্বাসী নয়। আমরা যদি তাই বিশ্বাস করতাম, তাহলে এদেশে বিএনপির অস্তিত্ব থাকতো না। কারণ বিএনপির হাতে আমরা যে পরিমাণ হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছি তা আর কেউ হয়নি।  

‘জঙ্গি সৃষ্টি, অগ্নিসন্ত্রাস, বোমা হামলা, মানি লন্ডারিং, এতিমের টাকা আত্মসাতসহ হেন অপকর্ম নেই যে খালেদা জিয়া, তার পুত্রদ্বয় এবং তার দলের নেতারা করেননি। ’

রুমিন ফারহানার বক্তব্যের জের ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (রুমিন) একটি অনাকাঙ্ক্ষিত, অসংসদীয় ও অবান্তর প্রশ্ন করেছেন। তিনি মানুষ হত্যা আর মশা মারাকে একই সমান্তরালে নিয়ে এসেছেন। সংসদ সদস্যের (রুমিন) নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালেই কী প্রশ্নকারী খুশি হতেন? রাষ্ট্র একটি যন্ত্রের মতো। এই যন্ত্রের বিভিন্ন কল-কব্জা যখন সমন্বিতভাবে কাজ করে, তখনই রাষ্ট্র ভালো থাকে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে কারণ রাষ্ট্রযন্ত্র ভালোভাবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, অকার্যকর রাষ্ট্রের উদাহরণ তো বিএনপিই সৃষ্টি করেছিল। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতো রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন ব্যক্তির কাছ থেকে। প্রধানমন্ত্রী ঘুমিয়ে থাকতেন, সিদ্ধান্ত দিতেন তারপুত্র হাওয়া ভবন থেকে। মন্ত্রী-সচিবরা হাওয়া ভবন থেকে নির্দেশের অপেক্ষায় প্রহর গুনতেন। সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  

‘সরকার প্রধানের অন্যতম কাজ এবং দায়িত্ব হলো সব মন্ত্রণালয়ের/বিভাগের কাজের সমন্বয় করা। মন্ত্রীদের কাজের তদারকি করা। জনগণ আমাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য। আরাম-আয়েশের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করিনি। ’

শেখ হাসিনা বলেন, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। যিনি তার জীবনটাই উৎসর্গ করেছিলেন এ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। তার কন্যা হিসেবে জনগণের প্রতি আমার দায়বদ্ধতার একটা আলাদা জায়গা রয়েছে। আমি সেটাই প্রতিপালনের চেষ্টা করি। সেজন্যই দিনরাত পরিশ্রম করি।  

‘কোনো প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করার জন্য নয়, সকল প্রতিষ্ঠানকে আরও সক্রিয় রাখার জন্য আমি সদা-সর্বদা সচেষ্ট থাকি। প্রশ্নকর্তা এমপির দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ আমার মা, ৩ ভাই এবং অন্তঃসত্ত্বা ভ্রাতৃবর্ধসহ আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের রক্তে রঞ্জিত হয়ে খুনিদের সহায়তায় ক্ষমতায় বসেছিলেন। জিয়াউর রহমানের প্রতিহিংসার বলি হয়ে জেলখানায় নির্মমভাবে নিহত হন জাতীয় চার নেতা। ’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জিয়াউর রহমান-ই তো এ দেশে হত্যা, ক্যু’র অপরাজনীতি শুরু করেন। সশস্ত্র বাহিনীর শত শত অফিসার, সৈনিককে হত্যা করেন। ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাটের সংস্কৃতি চালু করেন। একটা পুরো প্রজন্মকে নষ্ট করে দেন এই মেজর জিয়া। তাই বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যের মুখে মানুষ মারার বিষয়টি অবলিলায় চলে আসে। এটাই তো তাদের দলীয় আদর্শ।  

‘আর জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া যে তার (জিয়া) চেয়েও এক কাঠি সরেস- সে প্রমাণ তিনি করেছেন। হেন কোনো অপকর্ম নেই যে তিনি, তার পুত্রদ্বয় এবং তার দলের নেতারা করেননি,’ যোগ করেন তিনি।  

শেখ হাসিনা বলেন, প্রশ্নকর্তার নেত্রী খালেদা জিয়াও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার শাসনামলের ৫ বছরে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, মমতাজ উদ্দিনসহ আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকেসহ আওয়ামী লীগের পুরো নেতৃত্বকে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় মদদে খুনের নেশায় মত্ত হয়েছিল তার দল বিএনপি।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯
এসকে/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।