ঢাকা: অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হারুনুর রশীদ বলেছেন, অবিলম্বে সম্পূর্ণ রিপোর্টটি মিডিয়ায় প্রকাশিত হোক, তা হলে জনগণ আরও পরিষ্কার হবে। আমরা জানতে পারব কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদের সামনের সড়কে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি জানান তিনি।
হারুনুর রশীদ বলেন, গত ৩১ জুলাই দেশে একটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছিল। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার পরিবার যে মামলাটি দায়ের করেছিল সেটি বিচারধীন। সেই ঘটনায় সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল, সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে তারা রিপোর্ট দাখিল করেছে। আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যেটুকু তথ্য পেয়েছি তাতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। কারণ, এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির ক্ষেত্রে যে তথ্য আমরা পেয়েছি তাতে খুবই উদ্বিগ্ন।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের আদলে পুলিশ, সেনাবাহিনী, প্রশাসন, র্যাব, বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনীর সমন্নয়ে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এ কমিটির কার্যক্রম যখন পরিচালনা করা হয় তখন এ বিষয়ে পুলিশ প্রবল আপত্তি করেছে। কমিটির চেয়ারম্যান বলেছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে প্রবল আপত্তি ছিল। তদন্ত কমিটিতে থাকা পুলিশ প্রতিনিধি বিষয়টিতে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন।
আরেকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত রিপোর্টের বরাত দিয়ে হারুনুর রশীদ বলেন, সেটি আরও উদ্বেগের। কারণ, কমিটি বলেছে— স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেই অনুযায়ী এই ঘটনার উদ্দেশ্য কারণ ও প্রতিকারের জন্য আমরা সুপারিশ করেছি। অর্থাৎ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
তিনি বলেন, যেহেতু বিষয়টি এখনও তদন্তনাধীন ও বিচারাধীন। আমি মনে করি বিষয়টি রাষ্ট্রের ভিত্তিকে নাড়া দিয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আজকে রাষ্ট্রে মহীরুহ আকার ধারণ করেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে দেশের নাগরিকদের উঠিয়ে নিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। বিভিন্ন গল্প বানানো হচ্ছে, এতে আমরা উদ্বিগ্ন। এখন সাংবাদিক-শিক্ষকসহ যেকোন পেশার মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছে, গুমের শিকার হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিএনপির সংসদীয় দলের এই নেতা আরও বলেন, সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে এই গুম ও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ যে আইন করেছে সেখানে এখনও বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেনি। তাহলে কি আমরা ধরে নেব না যে সরকার এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে প্রলম্বিত করতে চায়। আমি দাবি জানাবো জাতিসংঘের যে আইনটি রয়েছে বাংলাদেশ অবিলম্বে এই আইনে স্বাক্ষর করবে।
এ সময় হারুনুর রশীদের সঙ্গে ছিলেন বগুড়া-৪ আসনের এমপি মোশারফ হোসেন ও চাপাইনবাগঞ্জ-২ আসনের এমপি আমিনুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২০
এমএইচ/এমজেএফ