ঢাকা: ভাস্কর্য ইস্যুতে বিএনপিকে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করুন। অন্যথায় জনগণের কাছে ভাস্কর্যবিরোধীদের ইন্ধনদাতা হিসেবে চিহ্নিত হবেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) ভাস্কর্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি নির্লজ্জের মতো বললেন, এটি আমাদের কাছে কোনো ইস্যু নয়। সমগ্র দেশ যখন ভাস্কর্য ইস্যুতে উত্তাল তখন তিনি বললেন, এটি নাকি তাদের কাছে কোনো ইস্যু নয়। ওনার কাছে ইস্যু হচ্ছে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা। ওনার কাছে ইস্যু হচ্ছে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি খালেদা জিয়ার পায়ের ব্যথা-হাঁটুর ব্যথা। আপনারা নিজেরাই দেশের বিভিন্ন স্থানে জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপন করেছেন। তাই এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুন। অন্যথায় ভাস্কর্যবিরোধীদের ইন্ধনদাতা হিসেবে জনগণের কাছে চিহ্নিত হবেন। ’
১৯৭১ সালে পরাজিত শক্তির পরবর্তী প্রজন্মই ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানব উন্নয়ন সূচকে যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই স্বাধীনতাবিরোধীদের পরবর্তী প্রজন্ম নতুন অপকৌশলে লিপ্ত হয়েছে। যারা চায়না দেশ এগিয়ে যাক। ’
‘১৯৭১ সালে সেই শক্তি ফতোয়া দিয়েছিল, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছে তারা কাফের। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ঈমানের বরখেলাপ, পাকিস্তানকে ভাঙতে চাওয়া ঈমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। স্বাধীনতা যুদ্ধে যখন মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠন করা হচ্ছিল তখন সেই ধর্ষণকারীদের স্বপক্ষে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তারা বলেছিল এরা গনিমতের মাল, তাদের ভোগ করা জায়েজ। তাদের পরবর্তী প্রজন্মই এখন ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে। ’
‘এ দেশে যুগ যুগ ধরে ভাস্কর্য আছে, অনেক ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। এখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণেই তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তারা এটিকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য আবার মাঝে-মধ্যে বঙ্গবন্ধুর পক্ষেও দু’একটি কথা বলছে। এটি তাদের নতুন ছলচাতুরি। তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অপকৌশলের অংশ। ’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি। তারপর কে হিন্দু, কে মুসলিম সেটা বিবেচ্য বিষয়। যে ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীকে পরাজিত করে দেশ প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এ স্বাধীন দেশে সেই অপশক্তিকে আর মাথাচাড়া দিতে দেওয়া যায় না। ’
তিনি বলেন, ‘আরব দেশ থেকে সাহায্য নিয়েই নিজেদের প্রতিষ্ঠান চালান, কিন্তু তাদের দিকে দেখেন না? সমস্ত আরব দেশে বিভিন্ন ভাস্কর্য রয়েছে। তাই এ নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না করে চোখ মেলে পৃথিবীর দিকে তাকান। অন্যথায় সমগ্র দেশ যেভাবে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে, এর আগুন আপনাদের গায়েও লাগবে। ’
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানার সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক শবান মাহমুদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২০
পিএম/আরবি